সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina)জন্মস্থান গোপালগঞ্জ। এখানকার বাসিন্দা শতবর্ষ পেরনো সুশীল দেউড়ি। বয়সের ভারে শরীর ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে তাঁর। চলাচলের জন্য লাঠিই একমাত্র সঙ্গী। বয়স শতবর্ষ পেরিয়েছে ২ বছর আগে। তবে এই বয়সেও তিনি কারও সাহায্য ছাড়াই ভোট দিতে গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জের (Gopalganj) কোটালিপাড়া উপজেলার তালপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল ৪টেয়। তার আগে লাঠিতে ভর দিয়ে এক পা, দুই পা করে হেঁটে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া সুশীল দেউড়ি। ভোটদান শেষে তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। সুশীল দেউড়ি বলেন, ‘‘হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) আমাগো সব দেছে। আমারে বয়স্ক ভাতা দেছে, আমার জামাইরে একখান ঘর দেছে, আমাগো বাড়ির সামনে সুন্দর একটা রাস্তা দেছে। যদি বাঁইচ্যা থাহি পাঁচ বছর পরও শেখ হাসিনারে ভোট দেব।’ সুশীল দেউড়ির বাড়ি কান্দি ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামে। চার বছর আগে তাঁর স্ত্রী আলোমতি দেউড়ি মারা যান। কোনও পুত্রসন্তান না থাকায় তিনি আশ্রয় নেন মেয়ে দুর্গা দেউড়ির বাড়িতে। জামাই পরিমল বাড়ৈ একজন দিনমজুর। তাঁরও কোনও পুত্র নেই। পরিমল বাড়ৈরও রয়েছে দুটি কন্যাসন্তান। এখানে মেয়ে, জামাই ও নাতনিকে নিয়ে সুখেই আছেন সুশীল দেউড়ি।
[আরও পড়ুন: অক্ষয় মহারাজের আশীর্বাদ মাথায় বাংলাদেশে ভোটের লড়াইয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী]
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (অঞ্চল প্রধান) তুষার মধু বলেন, ‘‘স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে সুশীল দেউড়িকে আমি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়েছি। সুশীল দেউড়ির জামাই পরিমল বাড়ৈর পরিবারের বসবাসের উপযোগী তেমন কোনও ঘর না থাকায় আমি সরকারিভাবে একটি সেমি পাকা ঘর দিয়েছি। এই ঘরেই মেয়ে-জামাইয়ের পরিবারে সুশীল দেউড়ি বসবাস করছেন। আমার এলাকায় গৃহহীন কোনও পরিবার নেই। শুধু উন্নয়নই নয়, এই এলাকার মানুষ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবেসেই ভোট দেয়।’’
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রীর ছেলে দিলেন ছাপ্পা! কেন্দ্রের ভোট বাতিল কমিশনের]
এদিকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় ভোট দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা পরিবারের। রবিবার লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের রাখালিয়া ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের কাছে এই ঘটনা বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মামুন বিন জাকারিয়া। মামুন বলেন, ”দুপুরে আয়েশা বেগম ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ঘটনাটি খুব দুঃখজনক।” এই খবর শুনে নৌকা প্রার্থী, জেলা আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।