সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাত পোহালেই চারদিনের ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina)। তাঁর এবারের সফরে পাখির চোখ তিস্তা (Teesta) জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর। এবার তিস্তার জল নিয়েই ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারত সফরের ঠিক আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। আর সেখানেই তিস্তা চুক্তি নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর মত, ভারতের ভিতরেই এ নিয়ে সমস্যা আছে। যদিও সেসব জট কাটিয়ে দ্রুত চুক্তি বাস্তবায়নে আশাবাদী হাসিনা।
দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তার জল নেওয়ার কথা বলে আসছে নয়াদিল্লিকে (New Delhi)। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘তিস্তার জলের অভাবে বাংলাদেশে চাষাবাদে সমস্যা হয়। একই কারণে আরও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিস্তা সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। কিন্তু ভারতের ভিতরেই এ নিয়ে সমস্যা আছে। এর সমাধান হওয়া উচিত।” ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া গঙ্গার (Ganges) জলবণ্টন চুক্তির কথা উল্লেখ করেন হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধু গঙ্গার জল ভাগাভাগি করি। এর জন্য আমরা চুক্তি করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ, তাই এটা একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। তাই এটি সমাধান করা উচিত।’’
[আরও পড়ুন: ২০২৯-এর মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে ভারত, দাবি SBI রিপোর্টে]
২০২৬ সালে গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। তারপর নতুন করে গঙ্গার জল বণ্টন ইস্যুটি প্রাধান্য পাবে হাসিনার আসন্ন সফরে। পাশাপাশি কুশিয়ারা, ফেনী, মুন, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার নদ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বৈঠকে নদীতীর ব্যবস্থাপনা, বন্যার আগাম তথ্য-সহ নদী সংক্রান্ত সব বিষয়েই আলোচনা হবে। সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে এএনআই-কে সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয়, যা পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে না। আপনি জানেন, আমরা ভাটির দেশ। তাই ভারত থেকে জল আসছে। তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ, এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। মাঝেমাঝে এই জলের প্রয়োজনে আমাদের জনগণকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে তিস্তার কারণে। এর কারণে চাষাবাদে সমস্যা হয়। আরও অনেক সমস্যা তৈরি হয়। তাই আমার মনে হয়, এ সমস্যার সমাধান করা উচিত। আমরা দেখেছি, নরেন্দ্র মোদি এই সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। কিন্তু সমস্যাটা ভারতের দেশের ভিতরে। আমার মনে হয়, এর সমাধান হওয়া উচিত।’’
[আরও পড়ুন: ‘এখনও বহু তাল গাছে রয়েছে, পিঠে পড়বেই’, এবার বেলাগাম মদন মিত্র]
সোমবার হাসিনা এসে পৌঁছবেন নয়াদিল্লিতে। পরদিন, ৬ তারিখ দু’দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা শেষে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, যৌথপর্যায়ের নদী সংক্রান্ত আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা নদীর জলবণ্টন নিয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।