নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: বাংলাদেশে চরমে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন। এখনও জেলবন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু। আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে আক্রান্ত আইনজীবী। চিন্ময়ের পরেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে একাধিক সন্ন্যাসীকে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে ভারতীয় হিন্দু জানলেই তাঁদের উপর বেড়ে যাচ্ছে অত্যাচার। বিপন্ন গণতান্ত্রিক কাঠামো। এই আবহে উলটে ভারতের উপরেই চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার? আজ মঙ্গলবার ঢাকায় তলব করা হয়েছে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে।
জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় বাংলাদেশি দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে তারই প্রতিবাদে আজ প্রণয় বর্মাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এদিন দুপুর ৪টেয় বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত বিদেশসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দপ্তরে তিনি হাজির হন। গতকাল সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশ ইস্যুতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় ত্রিপুরেশ্বরী সনাতন মন্ত্র ও হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের দুই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। অভিযোগ, সেই বিক্ষোভ চলাকালীনই আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে হামলা হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ৩ পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে ত্রিপুরা সরকার। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে দূতাবাসের।
গতকালই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছিলেন, "প্রতিবাদ মিছিলের সময় কিছু যুবক বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে ঢুকতে চেয়েছিল। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।" হামলায় সরব হয় ভারতের বিদেশমন্ত্রকও। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, আগরতলায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। কোনও পরিস্থিতিতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি নষ্ট করা উচিত নয়। এবার এই হামলাকে হাতিয়ার করেই পালটা ভারতের উপর চাপ বাড়াতে চাইছে ইউনুস সরকার। মত কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এদিকে, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে ইসকনের সন্ন্যাসীর জামিনের শুনানি ছিল। কিন্তু হামলার কারণে হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী। তাই আদালতে আসতে পারলেন না তিনি। আর এই ঘটনায় তটস্থ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময় প্রভুর আদালতে সওয়াল করতে রাজি হননি। ফলে পিছিয়ে যায় জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে আগামী ২ জানুয়ারি। ফলে এখনও একমাস কারাগারেই থাকতে হবে চিন্ময় প্রভুকে। এই ঘটনায় উদ্বেগ আরও বাড়ল ইসকন কর্তৃপক্ষের।