shono
Advertisement
Bangladesh

জুলাই বিপ্লবের হত্যাকারীরা ভারতে পালিয়েছে, বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী মামলায় দাবি আইনজীবীর

আত্মসমর্পণকারী সেনাকর্মীরা নির্দোষ, দাবি আইনজীবীর।
Published By: Kishore GhoshPosted: 07:27 PM Oct 22, 2025Updated: 07:27 PM Oct 22, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা এবং দু'টি গুমের মামলায় অভিযুক্ত হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ ৩২ জন। এর মধ্যে রয়েছেন ২৫ বর্তমান ও প্রাক্তন সেনাকর্তা। মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলায় যে ১৫ সেনাকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বক্তব্য আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেনের। তিনি বলেন, ‘যাঁরা আদতে অপরাধ করেছেন, তাঁরা ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন।" আইনজীবীর আরও দাবি, "আত্মসমর্পণকারী সেনাকর্মীরা নির্দোষ। কোর্টের মাধ্যমে তাঁরা ভবিষ্যতে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলেই আশা করি।’

Advertisement

বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামি হিসেবে ১৫ সেনাকর্তাকে আদালতে হাজির করার পর শুনানি শেষে আইনজীবী সরোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। ট্রাইব্যুনাল কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে এই সেনাকর্তাদের ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়। আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রাক্তন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন অ্যাপ্রুভার। তিনি বলেছেন, যা কিছু হয়েছে, তা শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের নির্দেশে হয়েছে। এখানে কারও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ’

প্রসিকিউশন এই সেনাকর্তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কথা জানিয়েছিল। সেই বিষয়ে প্রশ্নে আসামিদের আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি তাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন। কিন্তু সেটা পুলিশের মাধ্যমে কোর্টে সারেন্ডার করেছেন, সেটাকে তাঁরা বলেছেন যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা কখনই গ্রেপ্তার হননি। আগে সেনা সদর ব্রিফিং করেছিল, অভিযুক্তরা সেনা হেফাজতে আছেন।’

এর আগে আজ সকালে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর ১৫ সেনাকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১০টা নাগাদ এই সেনাকর্তাদের ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। পরে সবুজ রঙের প্রিজন ভ্যানটি ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে।

সকালে তিন মামলায় ১৫ সেনাকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।


অভিযুক্ত ১৫ সেনাকর্তা হলেন র‍্যাবের প্রাক্তন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা এবং দু'টি গুমের মামলায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বুধবার সকাল ৮টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করানো হয়। এরপর তিন মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানি হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সকাল সোয়া ৭টায় কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে ১৫ জনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সাড়ে ৭টায় প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা এবং দু'টি গুমের মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন ২৫ বর্তমান ও প্রাক্তন সেনাকর্তা-সহ মোট ৩২ জন। এই তিন মামলার ৩২ জন অভিযুক্তের মধ্যে আছেন পলাতক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র‍্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক। ৮ অক্টোবর অভিযোগপত্র গ্রহণের পর ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন পুলিশ মহাপরিদর্শককে। একইসঙ্গে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও পরোয়ানার অনুলিপি পাঠানো হয়। বুধবার কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দাখিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • প্রসিকিউশন এই সেনাকর্তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কথা জানিয়েছিল।
  • সকাল সোয়া ৭টায় কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে ১৫ জনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
Advertisement