সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকাল জানা গিয়েছিল হাসিনা আমলের বিদ্যুতচুক্তি বাতিল করছে না ইউনুস সরকার। তবে বিদ্যুতের দাম কমাতে বলবে বাংলাদেশ সরকার। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে নতুন খবর, বকেয়া বিতর্কের আবহে এবার আদানির থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই ৮০ কোটি ডলার বকেয়া মেটানো নিয়ে বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন মহম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, শীতের মরশুম চলায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটা কমেছে। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিট চালানোর প্রয়োজন নেই বলে আদানি গোষ্ঠীকে জানানো হয়েছে। মুখে বিদ্যুতের চাহিদা হ্রাসের কথা বললেও রয়টার্সের দাবি, কোটি কোটি টাকার দেনায় জর্জরিত বাংলাদেশ। এই অবস্থায় দেনা আর বাড়তে চাইছে না তারা। এই কারণেই আদানি গোষ্ঠীর থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনুস সরকার।
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে আদানি গোষ্ঠী। সেখানে দুটি ইউনিট রয়েছে। একটি ইউনিটের প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। বিদ্যুৎচুক্তি নিয়ে টালবাহানার মধ্যে ১ নভেম্বর থেকে একটি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে গোড্ডায়। ইউনুস সরকারের বক্তব্য, আপাতত শীতের মরসুমে ওই একটি ইউনিটেই কাজ চলে যাবে তাদের।
গতকাল বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এবং শক্তি দপ্তরের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবীর বলেছিলেন, বাংলাদেশে যতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তাতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। দেশে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের মধ্যে আদানিরা মাত্র এক-দশমাংশের জোগান দেন। এদিন আদানি গোষ্ঠীর নাম করে কবীর বলেন, “কোনও বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাকে আমরা ব্ল্যাকমেল করতে দেব না।” এর পরেই বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার আমলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎচুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এই চুক্তি নিয়ে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর পর গত সপ্তাহে বাংলাদেশের হাই কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেয়। এর জন্য আদালতের নির্দেশে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা। পাশাপাশি ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারও আদানি-সহ ছটি সংস্থাও সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎচুক্তি খতিয়ে দেখছে।