নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: হিন্দু নির্যাতনে উত্তাল বাংলাদেশ। দিকে দিকে অত্যাচারের শিকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা। এই উত্তাল পরিস্থিতিতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম-সহ সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে ঢাকায় এক 'আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলন’ করার প্রস্তাব দিলেন ধর্মীয় নেতারা।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আলোড়ন তৈরি করেছে বিশ্বমঞ্চে। হিন্দুদের রক্ষা করতে বাংলাদেশকে কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই ঢাকা যাচ্ছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। অন্যদিকে, সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছে ব্রিটেনও। কিন্তু সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনও অভিযোগই মানতে নারাজ মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করেন ধর্মীয় নেতারা। সেখানেই এই ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বৈঠকে ছিলেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, রমনার সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রালের ফাদার আলবার্ট রোজারিও, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, রমনা হরিচাঁদ মন্দিরের সহ-সম্পাদক অবিনাশ মিত্র, গারো পুরোহিত জনসন ম্যুরি থামাল।
এই বিষয়ের সরকারের অবস্থান নিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, "এটি একটি প্রস্তাবনা। বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদ খতিয়ে দেখবে। দেশ ও জনগণের ভালোর জন্য যেকোনও উদ্যোগ নিতে আমরা রাজি।" এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখমুখী হয়ে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ দাবি করেন, "আমাদের দেশের সংখ্যালঘু ভাইয়েরা নিরাপদে আছেন এবং আরও নিরাপদ থাকবেন। তাঁদের নিরাপদ রাখার জন্য সরকার যেমন কাজ করছে, ধর্মীয় নেতৃত্বও কাজ করছেন। আমরা মূলত এই বার্তা প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-সহ সবাই মিলে এই মাটি ও দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। সেই জায়গা থেকে আমাদের কোনও বিভেদ বা ফাটল নেই। যারা বিভেদ দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের প্রোপাগান্ডায় বিশ্ববাসী ও দেশের মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয়।"
এই একই সুরে গারো পুরোহিত জনসন ম্যুরি থামালও বলেন, "আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। মিডিয়ায় যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, আমরা তা প্রতিরোধ করব। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করব।" এখানেই প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যেকদিন যেখানে হিন্দু নির্যাতনের খবর প্রকাশ্যে আসছে সেখানে ধর্মীয় নেতারা কীভাবে বলছেন সংখ্যালঘুরা নিরাপদে রয়েছেন? তাহলে কি হিন্দু নির্যাতন ঢাকতেই প্রস্তাব? আগামী দিনে এই সম্মেলন হলে হিন্দু নিপীড়নে কতটা লাগাম টানতে পারে ইউনুস সরকার সেদিকেই নজর ওয়াকিবহাল মহলের।