shono
Advertisement

‘তিস্তার জল না পেলে ইলিশও দেব না’, ঠাট্টার ছলে মমতাকে বার্তা হাসিনার!

যদিও ইলিশের প্রথম চালানটি বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে ঢুকেছে।
Posted: 06:22 PM Sep 06, 2022Updated: 01:44 PM Sep 07, 2022

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর জল (Teesta River Water) ঢাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক এই নদীর জলের পাওনা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালালেও নানা কারণেই এই জল ভাগাভাগি চুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সফরে থাকা অবস্থাতেই তিস্তার জল নিয়ে ভারতকে ‘বার্তা’ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। কৌতুকের ছলে তিনি বলেছেন, “ভারত আমাদের পর্যাপ্ত জল দিচ্ছে না, তাই আমি এখনই ইলিশ (Hilsa) মাছ দিতে পারছি না।”

Advertisement

উল্লেখ্য, এরপরও সোমবার সন্ধ্যায় ইলিশের প্রথম চালানটি বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে প্রবেশ করে। প্রথম চালানে দু’টি ট্রাকে গিয়েছে ৮ মেট্রিক টন ইলিশ। ইলিশের ওজন ৭০০ গ্রাম থেকে দেড়-দুই কেজি পর্যন্ত। রাতেই সেই ইলিশ সড়ক পথে পৌঁছে যায় রাজ্যের বিভিন্ন পাইকারি মাছের বাজারে। এর মধ্যে কলকাতা সংলগ্ন হাওড়ার পাইকারি মাছের আড়তে সাড়ে ছয় মেট্রিক টন মাছ ঢুকেছে।

দুর্গাপুজো (Durga Puja 2022) উপলক্ষে ভারতে এবারও পাঁচ হাজার টনের মতো ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ ব্যবসায়ীদের। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই দফায় ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে ভারতে মোট ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও অনেকেই তা করেনি। তবে তার আগের বছর ২০২০ সালে সরকারি অনুমতির কথা মাথায় রেখে প্রথমে ১ হাজার ৪৫০ টন এবং পরে আরও ৪০০ টন ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা করা হয়েছে।

[আরও পড়ুন: বিতর্কিত মন্তব্যের জের? হাসিনার ভারত সফরে শেষ মুহূর্তে বাদ বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেন]

ঢাকা সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দিল্লিতে একটি কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিস্তা ও অন্যান্য নদীর জল নিম্ন প্রবাহের বিষয়টি সামনে এনে হাসতে হাসতে বলেন, “ভারত আমাদের পর্যাপ্ত জল দিচ্ছেন না, তাই আমি এখনই ইলিশ মাছ দিতে পারছি না। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আসন্ন পুজো মৌসুমের মধ্যে অক্টোবরে ইলিশ সরবরাহ করতে পারব।” ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডায় জল ভাগাভাগির বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি বিবেচনায় সোমবারের এই কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ হাইকমিশন। দিল্লিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, কূটনীতিক এবং সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ সংবর্ধনার জন্য আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নৈশভোজে প্রতিটি টেবিলের নামকরণ বাংলাদেশের নদীর নামে করা হয়েছিল। একটি টেবিলের নাম তিস্তা ছাড়াও মেঘনা, পদ্মা, খোয়াই ও কুশিয়ারা নামকরণও করা হয়। শেখ হাসিনা জানান, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে বৈঠকের আশা করেছিলেন, কিন্তু তা হয়নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মমতা আমার বোনের মতো, আমি যখনই চাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারি। আমাদের সবসময় ভাল সম্পর্ক ছিল।”

উল্লেখ্য, তিস্তার জল বন্টন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চর্চা বহুদিনের। আর এ বিষয়ে অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পড়শি দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্ক বরাবর মধুর। তবে তিস্তার জল বন্টনের ক্ষেত্রে কোনওভাবে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ উপেক্ষা করা সম্ভব নয় বলেই মত তাঁর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপেক্ষা করে যে তিস্তার জল বন্টন চুক্তি কোনওভাবেই সম্ভব নয়, তা প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও জানিয়েছিলেন। 

এদিকে ভারত সফরের প্রথম দিন সোমবার রাজধানী নয়াদিল্লির নিজামউদ্দিন দরগাহ ও মাজারে গিয়ে কার্যত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। তিনি জানান, বাবার হত্যার পরে দিল্লিতে নির্বাসনে থাকার সময় তিনি প্রথম এই দরগাহ পরিদর্শন করেছিলেন। আগামী বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আজমের শরিফ দরগাহ পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা।

[আরও পড়ুন: আকাশছোঁয়া ভাড়া বাংলাদেশের মেট্রোয়, যাতায়াতের সুবিধা কতটা পাবে জনসাধারণ?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement