সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ১১ বছর পর আবার বাংলাদেশি আরোহী হিসেবে এভারেস্টের শিখরে পৌঁছলেন বছর তেত্রিশের বাবর আলি। রবিবার নেপালের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পর্বতচূড়ায় পৌঁছে দেশের পতাকা ওড়ান বাবর। যে সংগঠনের হয়ে তিনি পর্বতারোহণ করেন, সেই ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়া পোস্টে তাঁর সাফল্যের খবর জানানো হয়েছে। এও জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে বাবর রয়েছেন ক্যাম্প ফোরের ডেথ জোনে।
এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) পর্বতারোহী বাবর আলি নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন গত ১ এপ্রিল। সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ৪ এপ্রিল কাঠমান্ডু (Kathmandu) থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এর পর এভারেস্ট বেসক্যাম্পের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন ৩৩ বছরের বাবর। সেখানে পৌঁছন ১০ এপ্রিল। এভারেস্ট (Mount Everest) অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ, উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। আর সে কাজ যাতে মসৃণভাবে করতে পারেন, তার জন্য একাধিকবার বাবর নানা উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। ২৬ এপ্রিল বেসক্যাম্প থেকে এভারেস্টের ক্যাম্প ২ পর্যন্ত ঘুরে আসার পরও অনুকূল আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় বাবরকে।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে হলে কংগ্রেস ছাড়ুন’, খাড়গের ‘ধমকে’র পরই অধীরকে বিজেপিতে ডাক সুকান্তর]
এর পর ১৪ মে মাঝরাতে বেসক্যাম্প (Base camp) থেকে বাবরের যাত্রা শুরু হয় এভারেস্টের অভিমুখে। প্রথম দিনেই সরাসরি উঠে যান ক্যাম্প ২-এ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেখানে দুরাত কাটিয়ে ১৮ মে ক্যাম্প ৩-তে আরোহণ এবং শেষমেশ ১৯ মে মাঝরাতে বাবর পৌঁছে যান ক্যাম্প ৪-এ। আর ভোরের প্রথম আলোয় ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে ১১ বছর পর বাবরের হাত ধরে উড়ল বাংলাদেশের পতাকা।
ক্যাম্প-৪ থেকে চূড়ায় যাওয়ার পথে অপেক্ষারত বাবর আলি। ছবি: ফেসবুক।
২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের শীর্ষে ওঠেন মুসা ইব্রাহিম। এর পর ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই মাসের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরিন জয় করেন এভারেস্ট। ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্টজয়ী পঞ্চম বাংলাদেশি সজল খালেদ অবরোহণের সময় প্রাণ হারান। তাতেই বাংলাদেশের এভারেস্ট অভিযানে ভাটা পড়ে। আজ, ২০২৪ সালে বাবর তা কাটিয়ে দিলেন।
[আরও পড়ুন: সুন্দরবনে গুলির লড়াই, চোরাশিকারিদের গুলিতে খুন বনকর্মী]
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস (MBBS) পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সি বাবর আলি। চিকিৎসক হিসেবে পেশা শুরু করলেও থিতু হননি। ডাক্তারি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরা শুরু করেন। এর আগে সাইকেল নিয়ে মাত্র একমাসে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পৌঁছেছিলেন বাবর। নিজের এসব অভিজ্ঞতা নিয়ে বইও লিখেছেন বাবর। তিনি দেশে ফিরলে বড় করে সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে।