অর্ণব দাস, বারাকপুর: ভাটপাড়ায় তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় সাংসদ অর্জুন সিংকে (Arjun Singh) নিশানা করলেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যা নিয়ে ফের চর্চায় শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। ফলে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
গত ২১ নভেম্বর ভাটপাড়া পুরসভা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুরানি তালাব সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূল (TMC) কর্মী ভিকি যাদবকে বাড়ির সামনে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায়। ঘটনার তিনদিনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। যদিও ভিন রাজ্যের ভাড়াটে খুনিরা এখনও অধরা। তাদের ধরতে ইতিমধ্যেই বারাকপুর কমিশনারেটের ডিডিকে তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জগদ্দলে তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের দলীয় কর্মী খুনের এই ঘটনায় নিশানা করলেন দলের নেতা বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে।
[আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুন, ডিসেম্বরের শহরে লাফিয়ে বাড়ল ডিমের দাম]
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সোমনাথ শ্যাম বলেন, “ভিকি যাদব খুনের ঘটনায় দেখা গিয়েছে মেঘনা জুটমিলের পুরাতন লাইন থেকে বেরিয়ে খুনিরা খুন করে আবার সেখানে ঢুকে যায়। এই কারণেই আমি বলেছি কোথাও না কোথাও সাংসদ বা তাঁর পরিবারের কেউ জড়িত রয়েছে। অর্জুন সিংয়ের পরিবারের সেই যুক্ত লোকের নাম পাপ্পু সিং।” একইসঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “কেউ প্রভাব খাটাচ্ছে তাই হয়তো পুলিশ পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় পুলিশ এবার পিছবে না, কারণ পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার করার জন্য যথেষ্ট তথ্য আছে। যে খুন করেছে তাকে জেল খাটতেই হবে।” বিধায়কের এই মন্তব্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। তৃণমূলের তরফে প্রকাশ্যে এনিয়ে কেউ কিছু বলতে না চাইলেও লোকসভা ভোটের আগে পুলিশ প্রশাসন সহ দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দলের বিধায়কের এভাবে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া কেউই ভালোভাবে নেননি।
সাংসদ অর্জুন সিং জানিয়েছেন, “সময় মতো এর উত্তর দেওয়া হবে।” তবে শাসকদলের এই গোষ্ঠী কোন্দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপি রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “আমার প্রথম থেকেই বলেছি রাজ্যের পুলিশ নিষ্ক্রিয়, তৃণমূল নিজেরাই নিজেদের খুন করেছে। আমাদের এই কথাটাই তৃণমূল বিধায়ক বলে দিল।” সিপিএম নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্য কার্যত পুলিশ মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। কারণ তিনি অর্জুন সিংকে দলে নিয়েছেন। আর তার দলের বিধায়কই পুলিশ এবং অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে বলছেন।”