বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতেও সাময়িক ভাবে বন্ধ হল বাংলাদেশের ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র। দীপুচন্দ্র দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা ও বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বেড়ে চলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে শিলিগুড়িতে দফায়-দফায় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ দেখায় বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের তরফে। সেবক রোডে থাকা বাংলাদেশের ভিসা আবেদন কেন্দ্র ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। এমনকী ভিসা কেন্দ্রের গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও দাবি। এরপরেই বাংলাদেশের ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে বলে খবর। সোমবারেই নয়াদিল্লির ভিসাকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালর জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর চলে গণপিটুনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন।
বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা অশান্তি ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে শিলিগুড়িতে প্রতিবাদে নামে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ৷ রবিবার রাত থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কর্মসূচি। বাংলাদেশিদের জন্য ভারতে সমস্তরকম চিকিৎসা, শিক্ষা-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বন্ধ করার দাবি জানায় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা। এই ইস্যুতেই সোমবার ফের পথে নামেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিধান রোড দিয়ে মঞ্চের কর্মী, সমর্থকরা মিছিল করে সেবক রোডে থাকা বাংলাদেশের ভিসা আবেদন কেন্দ্র ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখান। ওই সময় আন্দোলনকারীরা বাইরে থাকা ভিসা কেন্দ্রের বোর্ড ভাঙচুর ও ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ভিসা কেন্দ্রের গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে দাবি। বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি সামাল দেয়৷
শিলিগুড়িতে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রতিবাদ।
আন্দোলনকারীদের দাবি, অবিলম্বে বাংলাদেশিদের সমস্তরকম ভিসা দেওয়া বন্ধ করতে হবে৷ তা না-হলে, আগামীতে আরও বড় আন্দোলন হবে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দার্জিলিং জেলার সভাপতি লক্ষ্মণ বনসল বলেন, ''বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার বেড়েই চলেছে৷ একজন অসহায় হিন্দুকে নৃশংসভাবে গণপিটুনি ও জীবন্ত জ্বালিয়ে মারা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।''
