শেখর চন্দ্র, আসানসোল: প্রতিবেশীর দেহ সৎকার করে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনা। বালি বোঝাই লরির ধাক্কায় মৃত বিজেপি কর্মী। মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে বিক্ষোভ পরিবারের। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর জনতার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পালটা লাঠিচার্জের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী ও পরিজনেরা। শুক্রবার রাতের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আসনসোলের জামুরিয়া। শনিবারও বিজেপির কর্মীর পরিবারের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মীরা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
মৃত বিজেপি কর্মীর নাম পাগল গোপ। তিনি জামুড়িয়ার ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে বিজেপি কর্মীর প্রতিবেশী মারা যান। সেই রাতেই দেহ সৎকার করে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় একটি বালির বোঝাই লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর। ক্ষতিপূরণের দাবিতে পরিবার ও স্থানীয় মানুষ মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তখনই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাঁধে। অভিযোগ উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। তারপর পুলিশ পালটা লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ। আহত হন মৃতের স্ত্রী দুর্গা গোপ। কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
এই ঘটনার পর শনিবার সকালে ফের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাস্থলে যান নেতৃত্বরা। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, মৃত পাগল গোপ দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। মৃতের পরিবারের উপর পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ চালিয়েছে। যে বালির গাড়িতে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটিও অবৈধ।
আরও অভিযোগ, পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মৃতদেহ উদ্ধারের তৎপরতা দেখায়। স্থানীয় মানুষজন মৃতদেহ তুলতে বাধা দেওয়ায় লাঠিচার্জ করে। বিজেপি জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, "অবৈধ ভাবে বালি পাচার হচ্ছে। সেই লরির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও যাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁদের মুক্তি দাবি করছি। পুলিশের উপর হামলা হয়নি।" মৃতের স্ত্রী দুর্গা গোপ বলেন, "শ্মশান থেকে ফিরছিল, সেই সময় দুর্ঘটনায় আমার স্বামী মারা যান। আমি দেহের সামনে বসে কাঁদছিলাম। পুলিশ আমাদের মারে। যার জন্য স্বামীর মৃত্যু হল তার শাস্তি চাই।" তৃণমূল বিধায়ক হারেরাম সিং বলেন, "যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু ওরা পুলিশের উপর হামলা করেছে। কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।"
