অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: মুর্শিদাবাদে নার্সের রহস্যমৃত্যু। ভাড়া বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার দেহ। দেহের হাতে স্যালাইনের সূচ বিঁধে ছিল। কেন সূচ লাগানো ছিল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বিডিও মোড় সংলগ্ন এলাকায়। তিনি ডোমকল মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত নার্সের নাম আমিনা সুলতানা। বয়স ২৪ বছর। তিনি বেলডাঙার মাড্ডা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ১০ মাস আগে এলাকার যুবক তানবির আজিমের সঙ্গে বিয়ে হয়। তবে কর্মসূত্রে বিডিও মোড় সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন আমিনা। সেখানেই মাঝে মধ্যে আসতেন স্বামী। শুক্রবার রাতে তিনি ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। তানবির জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ তাঁদের ভিডিও কলে কথা হয়। তখন আমিনা জানিয়েছিলেন শরীর খারাপ। পরে গভীর রাতের দিকে ফের ফোন করলে আমিনার ফোন বেজে গেলেও তিনি ধরেননি। তানবির জানিয়েছেন, "শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ভিডিও কলে কথা হয়। তখন বলেছিল শরীর খারাপ। শনিবার একটা নিমন্ত্রণ বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তাই বলে ফোন কেটে দেয়। রাতে আবার ফোন করেছিলাম পাইনি। ভেবেছিলাম ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালে অনেক বেলা পর্যন্ত ফোনে না পেয়ে ঘরের মালিককে জানালে তিনি এসে খোঁজ নেন। দেখেন দরজা ভিতর থেকে লাগানো ছিল।"
বিস্তর ডাকাডাকির পর সাড়াশব্দ না পেয়ে বাড়ির মালিক পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় আত্মীয়দের খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন আমিনা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহে সূচ লাগানো নিয়ে তানবির বলেন, "মাঝে মধ্যে ডিহাইড্রেশনে ভুগত, নিজেই স্যালাইন নিত। কালকেও নিয়েছে কি না জানি না।"
জানা গিয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে যুবতী ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। হাসপাতালের কাছেই ডোমকল বিডিও মোড় সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারেও হাসপাতালের ডিউটি সেড়ে ভাড়া বাড়িতে গিয়েছিলেন। এবং ঘরে একাই ছিলেন। ডোমকল মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সৌরভ শীলের কথায়, "হাসিখুশি মেয়ে ছিলেন। শুক্রবারেও হাসপাতালে স্বাভাবিক ডিউটি করেছেন। হঠাৎ কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বাড়ির লোকেদেরও খবর দেওয়া হয়েছে।"