চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে নির্লজ্জভাবে পক্ষপাতিত্বও করতে রাজি আছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তবে তার জন্য সমস্যা বা বিষয়টি তাঁকে জানাতে হবে। বনসৃজনের ক্ষেত্রে কমপেন্সেটরি অ্যাফরেস্ট্রেশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং অথরিটি বা ক্যাম্পা ফান্ডের ক্ষেত্রে বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে। তৃণমূলের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার আসানসোলে একথা বললেন বাবুল।
[আরও পড়ুন: এবার টোটো পাড়াতেও ঘোরার সুযোগ, পর্যটকদের জন্য বাড়ল জঙ্গল সাফারির সীমানা]
কয়েকদিন আগে রাজ্যগুলিকে ক্যাম্পা ফান্ডের ৪৮ হাজার কোটি টাকা বন্টন করে কেন্দ্র। বনমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র হাত ধরেই ওই চেকগুলি বন্টন হয়। এরপরই বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অন্য রাজ্যগুলি হাজার কোটি টাকা করে ফান্ড পেলেও বাংলার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল মাত্র ২৩৬ কোটি টাকা। শনিবার যখন কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী তথা স্থানীয় সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলে রয়েছেন তখনও একই অভিযোগ করলেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি বলেন, ‘বাংলা থেকে ১৮টা সাংসদ পেয়েও কেন্দ্রের তরফে এই রাজ্যকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আশাকরি বাংলার মানুষ সঠিক সময়ে এর সঠিক জবাব দেবেন।’
এর উত্তরে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘বাংলা থেকে ওই ফান্ড নিতে কোনও মন্ত্রী আসেননি। অথচ বাঘ সংরক্ষণ ও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের বিরাট তাৎপর্য আছে। তবু রাজ্যের বনদপ্তর আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেনি। প্রত্যেকটি রাজ্যের বনমন্ত্রীরা ওইদিন এসেছিলেন। সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু, বাংলা থেকে বনমন্ত্রী আসেননি। ওনারা সমস্যার কথা না বললে জানব কী করে? আমি কথা দিচ্ছি উনি যদি বিষয়টি আমাকে জানান, তবে আমি বাংলার প্রতিনিধি হয়ে পক্ষপাতিত্ব করেও বনসৃজনের জন্য আরও ফান্ড এনে দেব।’
[আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে মৃতদেহে ঝাড়ফুঁক, পরিবারের কুসংস্কারের বলি একরত্তি শিশু]
জানা গিয়েছে, বনসৃজন খাতে ব্যয় করার জন্য দেওয়া এই অর্থ বরাদ্দের নিরিখে ২৭টি রাজ্যের মধ্যে বাংলার স্থান ২২। গত ২৯ আগস্ট দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের বনমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী প্রকাশ জাভেড়কর ও রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ক্যাম্পা ফান্ডের অর্থ অনুমোদন করেন। যদিও সেখানে এরাজ্যের বনমন্ত্রী ছিলেন না। সেই মতো ওড়িশা, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এমনকী পার্শ্ববর্তী ছোট রাজ্য ঝাড়খন্ডও পেয়েছে পাঁচ হাজার কোটির ওপর। মহারাষ্ট্র এবং তেলেঙ্গানার জন্য তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। সেখানে বাংলার জন্য অনেক কম অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
শনিবার রাজ্যের বনমন্ত্রীকে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি আসানসোলের কুমারপুর ওভারব্রিজের কাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন বাবুল। কাজটি চারবছর ধরে আটকে ছিল। কিন্তু, এখন চালু হওয়ার পরে দ্রুতগতিতে কাজ এগোচ্ছে। কুমারপুর ওভারব্রিজের পাশাপাশি আজ ঢাকেশ্বরী প্রান্তিক বৃদ্ধাশ্রমেও যান কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সেখানে থাকা আবাসিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
The post ‘বাংলার জন্য নির্লজ্জভাবে পক্ষপাতিত্ব করতেও রাজি’, বনসৃজনের ফান্ড নিয়ে বললেন বাবুল appeared first on Sangbad Pratidin.
