রাজা দাস, বালুরঘাট: চাইল্ড লাইন ও প্রশাসনের তৎপরতায় রক্ষা পেল সাত নাবালিকার শৈশব৷ রবিবার রাতে গোপন অভিযান চালিয়ে ওই সাত নাবালিকার বিয়ে আটকাল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পুলিশ৷ ঘটনাগুলি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমুন্ডি, বালুরঘাট-১, কুমারগঞ্জ-১ ও গঙ্গারামপুর-১ ব্লকে৷ এরমধ্যে, কুশমুন্ডি ব্লকেই বিয়ে হচ্ছিল চারজন নাবালিকার৷ এই ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের৷ শিশু ও মেয়েদের অধিকার রক্ষার্থে সচেতনতার প্রচার চালালেও, তা কোনও কাজে আসছে না দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আধিকারিকরা৷
[মুক্ত সংশোধনাগার দেখাচ্ছে আশার আলো, সৎ পথে ফিরছে সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা]
জানা গিয়েছে, কুমারগঞ্জের উত্তর করনজি এলাকায় ১৫ বছরের এক নাবালিকার বিয়ে দিচ্ছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা৷ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওই নাবালিকা নবম শ্রেণির পড়ুয়া৷ প্রশাসনের আধিকারিকরা এক নাবালিকাকে উদ্ধার করেন কাশিয়াডাঙ্গার উথলিয়া এলাকা থেকে৷ ১৪ বছর বয়সের ওই নাবালিকা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী৷ উদ্ধার হওয়া আরও দুই কুশমুন্ডির শিয়ালা এলাকার বাসিন্দা। তাদের বয়স যথাক্রমে, ১৩ বছর ও ১৭ বছর। এরা স্থানীয় কুশমুন্ডি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী৷ উদ্ধার হওয়া বাকি নাবালিকাদের বয়স যথাক্রমে ১৬ বছর, ১৭ বছর ও ১৫ বছর৷ জেলা চাইল্ড লাইন কর্তারা জানাচ্ছেন, অগ্রহায়ণ পড়তেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিয়ের উৎসব এবং তাঁদের নজরদারির পালা৷ বিয়ের মরশুমে জেলার প্রতিটি ব্লকে তীক্ষ্ণ নজর রাখা হচ্ছে৷ রবিবার গোপন সূত্রে এই সাত নাবালিকার বিয়ের খবর আসে তাঁদের কাছে৷ সেই খবর অনুযায়ী, রাতে চারটি আলাদা আলাদা এলাকায় অভিযান চালান তাঁরা এবং বিয়ের আগেই উদ্ধার করেন ওই সাতজন নাবালিকাকে৷ উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করেন, চাইল্ড লাইন আধিকারিক, জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কর্মী, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের আধিকারিকরা।
[স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের জের! হাসপাতালেই আত্মঘাতী ঠিকাকর্মী]
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সুরজ দাশ জানান, “এটা বড় সাফল্য৷ তবে উদ্বেগেরও বিষয়৷ কারণ, এত সংখ্যক নাবালিকার বিয়ের ঘটনাই প্রমাণ করে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে৷ অথচ, মানুষকে সচেতন করার জন্য বহু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷” অভিভাবকদের আরও সচেতন করতে এলাকার স্কুলগুলিতে এবার নিয়মিত ক্যাম্প করা হবে বলে জানান সুরজ বাবু। এই সমস্যার অন্যতম কারণ হিসাবে আর্থিক অনটনকেই দায়ী করছেন প্রশাসনের কর্তারা।
