শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: যেমন কথা, তেমনই কাজ। গত মাসে ওয়াকফ অশান্তিতে বিধ্বস্ত মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুর থেকে কপ্টারে সামশেরগঞ্জ পৌঁছন তিনি। হেলিপ্যাড থেকে হেঁটে বিডিও অফিসে যান। রাস্তার দু'ধারে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের ভিড়ের মাঝেই ব্লক কার্যালয়ে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য উপস্থিত ছিলেন বিধ্বস্ত পরিবারের সদস্যরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত সমস্যার কথা শোনেন। সঙ্গে ছিলেন ডিজি রাজীব কুমার, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কথা বলে কিছুটা ভরসা পেয়েছে পরিবারগুলি। এরপর সুতিতে প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, সেখানে নিহত যুবক এবং কাশ্মীরে শহিদ সেনা জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন তিনি।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে গত মাসে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ানে বিক্ষিপ্ত অশান্তি তৈরি হয়। ঘটে প্রাণহানিও। অশান্তির মাঝে পড়ে বাবা-ছেলে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। যদিও পুলিশ অতি সক্রিয়তার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সেসময় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি যাবেন মুর্শিদাবাদ, অশান্ত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করবেন।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগের দিন তাঁদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পরিকল্পনামতো তাঁদের সল্টলেকের কোনও একটি জায়গায় রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। সোমবার বহরমপুর পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে বিজেপিকে দায়ী করে জানিয়েছিলেন, দাস পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউ এলাকায় নেই। তাই সাক্ষাতের প্রশ্ন নেই। তবে অন্যান্য যারা ওয়াকফ অশান্তির মাঝে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চান বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো মঙ্গলবার দুপুরে এই পরিবারগুলির সমস্যার কথা শোনেন। তাঁদের জন্য সরকারি সাহায্যের দানের কাজ কতটা এগোল, সে বিষয়ে কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে।
এরপর সুতির উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ছাবঘাটি ময়দানে তাঁর প্রশাসনিক সভা। রয়েছে একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন। জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠান শেষে সেখানে কাশ্মীরে শহিদ নদিয়ার জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের পরিবার ও সুতির কাশিমনগরে অশান্তিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত এজাজ আহমেদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী।
