ধীমান রায়,কাটোয়া: ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত বাবা প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে বাড়িতে পড়ে রয়েছেন। অর্থাভাবে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় তিনি ভুগছেন৷ মরণাপন্ন বাবাকে বাঁচাতে এবার সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হলেন মেয়ে৷ ফেসবুকের মাধ্যমে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে৷
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার বাজার সারদা পল্লির বাসিন্দা সোমা প্রামাণিক নামে ওই তরুণী তাঁর বাবার ছবি পোস্ট করেছেন ফেসবুকে৷ সেইসঙ্গে আবেদন করেছেন আর্থিক সাহায্যের জন্য। তাঁর আবেদন, ‘ বাবার ব্রেন অপারেশনের জন্য বলা হয়৷ কিন্তু আমি এতটাই অসহায় যে কিছুই করতে পারছি না। আপনারা আমাকে দয়া করে একটু আর্থিক সাহায্য করলে আমি আমার বাবাকে চিকিৎসা করাতে পারব৷’ ফেসবুকের একটি গ্রুপে এই পোস্ট করেছেন সোমা।
[ আরও পড়ুন : ৫০ ফুট উঁচু থেকে সোজা মাটিতে, চড়কে শূন্যে ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু যুবকের]
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাতার বাজার এলাকার সারদা পল্লির বাসিন্দা সোমা প্রামাণিক। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বাবা শৈলেনবাবু ও মা ঝর্ণাদেবী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শৈলেনবাবু বাঁকুড়ার একটি ইটভাঁটায় কাজ করতেন। তাঁর উপরেই সংসার নির্ভরশীল ছিল। সোমা নিজে কলা বিভাগে স্নাতক। টিউশন পড়িয়ে সামান্য আয় করেন। খুব অভাবের মধ্যেই সংসার চলছে তাঁদের। এরই মধ্যে শৈলেনবাবুর এমন দুর্ঘটনায় দরিদ্র পরিবারে নেমে এসেছে মেঘ ঘনিয়েছে।
সোমা জানিয়েছেন, দু’সপ্তাহ আগে ইঁটভাটায় কাজ করতে করতেই শৈলেনবাবু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্ঞান হারান। তাঁকে সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, শৈলেনবাবু ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিছুদিন রেখে চিকিৎসা করানো হয়। সোমা বলেন, ‘বর্ধমান হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, বাবার ব্রেন অপারেশন করাতে হবে। তাতে অনেক খরচ। এখনই অপারেশন না করালে, ডাক্তারবাবুরা বাবাকে বাড়ি নিয়ে চলে আসতে বলায় তাইই করি৷ এখন বাড়িতেই রেখে দিয়েছি বাবাকে। টাকার অভাবে বাবা একই অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। কোনও দিশা পাচ্ছি না।’ স্ত্রী ঝর্ণাদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘আমার স্বামীর উপার্জনেই সংসার চলত। মেয়ে টিউশন পড়িয়ে যেটুকু টাকা জমিয়েছিল, তা স্বামীর ওষুধ কিনতেই খরচ হয়ে গিয়েছে। একদিকে সংসার চালানোরও টাকা নেই। তারউপর বিনা চিকিৎসায় স্বামীকে বাড়িতে ফেলে রাখতে হয়েছে। আমার মেয়ে সাহায্যের জন্য বিভিন্নজনের কাছে অনুরোধ করছে।’
[ আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে আক্রান্ত কংগ্রেস নেতা, প্রতিবাদে রাতভর ধরনায় অধীর চৌধুরি]
এরই মধ্যে কয়েকজন প্রতিবেশী রোজ নিয়ম করে শৈলেনবাবুর খোঁজখবর নিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে হাতেমা বিবি, রীতা সামন্তদের বক্তব্য, ‘শৈলেনবাবু এই কয়েকদিন টানা বিছানায় থাকার ফলে তাঁর শরীরের বেশ কিছু অংশে বেড সোর হয়ে গিয়েছে। সোমা তার বাবাকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ছোট মেয়েটাকে দেখেও খুব কষ্ট হচ্ছে। আমরাও পরিচিত মহলে অনুরোধ করছি, যাতে সাধ্যমত ওদের সাহায্য করা হয়।’ সবমিলিয়ে, শৈলেনবাবুর সুস্থ হওয়া এখন সাহায্যকারীদের উপরই নির্ভরশীল৷
ছবি: জয়ন্ত দাস।
The post স্ট্রোকে আক্রান্ত বাবার অপারেশনের জোগাড় করতে ফেসবুকে আর্তি তরুণীর appeared first on Sangbad Pratidin.
