সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলাদের দেখে অশালীন আকার ইঙ্গিত যেন আজকাল জলভাতের মতো হয়ে গিয়েছে। একটা ছেলে একটা মেয়েকে একসঙ্গে দেখলে সমাজের ‘সো-কলড’ নিয়মানুবর্তী দাদু-কাকুরা আড়চোখে দেখে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ে দেখা যায় মহিলাদের সঙ্গে অযাচিত কর্মকাণ্ডের পিছনে রয়েছে এরাই। আর এখন, মুঠোফোনের সুবাদে ছড়িয়ে পড়েছে তার প্রমাণ। কিছুদিন আগে কলকাতার বাসে হস্তমৈথুন করতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল এক ব্যক্তি। এক ছাত্রীকে দেখে হস্তমৈথুন করছিল সে। মেয়েটি বারবার বলা সত্ত্বেও বাসের তার দিকে এগিয়ে আসেনি কেউ। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়েই মোবাইল আর সোশ্যাল সাইটের সাহায্য নেয় সে। মোবাইলে গোটা ঘটনাটি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় সে।
[ চলন্ত বাসে হস্তমৈথুন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ ]
এক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়ার একটি মেলায়। মেলা প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে এক কিশোরীর পিছনে দাঁড়িয়ে ক্রমাগত অদচাচরণ করে গেল এক প্রৌঢ়। প্রকাশ্যেই। একবার নয়। বারবার। কিশোরী যে বুঝতে পারছিল না, তা নয়। বয়ঃজ্যেষ্ঠ। তাই হয়তো কিছু বলতে পারছিল না। শেষমেশ বাধ্য হয়ে সে তার মা (বা কোনও আত্মীয়)-কে কথাটি বলে। কিন্তু কোনও উচ্চবাচ্য করেননি তিনিও। কিশোরীকে খানিকটা তফাতে নিয়ে যান। এরপর সেই প্রৌঢ় সরে যায়। গোটা ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করেন অন্য একজন। তিনি ভিডিওটি ছড়িয়ে দেন। তাঁর কাছ থেকে সেটি এখন ফেসবুকে ভাইরাল। পোস্টটি ছড়িয়ে পড়া মাত্রই শুরু হয় প্রতিবাদ। ঝড় বয়ে যায় কমেন্টের। ওই ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে সরব হয় ‘নাগরিক সমাজ’। প্রতিবাদ, শাস্তির দাবি এগুলি উঠছে যথেষ্ট পরিমাণেই। কিন্তু তার আড়ালে থেকে গিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন।
[ ফিল্মি কায়দায় তোলাবাজি করতে গিয়ে শ্রীঘরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ]
প্রথম এবং প্রধান, অবশ্যই পুলিশের ভূমিকা। কলকাতার হস্তমৈথুনের ঘটনাটিতে কলকাতার পুলিশ খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল। সেবার ভিডিও শেয়ার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের হেফাজতে এসে গিয়েছিল অভিযুক্ত। কিন্তু এবার কিন্তু তার চিহ্নমাত্র নেই। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ আদৌ বিষয়টি নিয়ে অবগত কিনা তাও জানা যায়নি। তাদের তরফে কোনও বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়নি।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি সামাজিক। রাস্তাঘাটে এমন কর্মকাণ্ডের শিকার হন অনেক মহিলা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিস্থিতিটাই এড়িয়ে যান তাঁরা। হয় কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে জায়গা থেকে সরে আসেন, অথবা “সরে দাঁড়ান” বলে দায়িত্ব সারেন। কিন্তু এতে কি আদতেও হুঁশ ফেরে এমন ‘মানুষ’-এর? নাকি বাসের সেই মেয়েটির মতো সরাসরি প্রতিবাদ করে সাড়া না পাওয়ার ভয়ে গুটিয়ে থাকেন তাঁরা। টুঁ শব্দ করা সাহসও দেখাতেও ডরান? কিন্তু মহিলারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ না করলে হয়তো সমাধান হবে না এই সমস্যার। ফেসবুকের প্রতিবাদ ভারচুয়াল জগতেই থাকবে সীমাবদ্ধ। চুঁচুড়ার ঘটনা আরও একবার কি সেকথাই প্রকাশ্যে এনে দিল?
The post চুঁচুড়ায় মেলার ভিড়ে কিশোরীর সঙ্গে অসভ্যতা প্রৌঢ়ের, নেটদুনিয়ায় ভাইরাল ভিডিও appeared first on Sangbad Pratidin.
