ধীমান রায়, কাটোয়া: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর (Jadavpur Student Death) ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আরও এক প্রাক্তনী। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাঁদরা স্টেশন রোডের কাছে তাঁর বাড়ি। পরিবারে বাবা, মা ছাড়াও রয়েছেন দাদা। পরিবারের কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে এধরনের নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন তাঁদের ছেলে। তবে যদি সত্যিই ছাত্রমৃত্যু বা পুলিশকে বাধা দেওয়ার মতো ঘৃন্য কাজের সঙ্গে জয়দীপের যোগাযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তাঁর কঠোর শাস্তি চান বাবা বংশীলাল ঘোষ।
একসময় চায়ের দোকানে কাজ করতেন বংশীলালবাবু। পরে বাড়ি লাগোয়া মিষ্টির দোকান খুলেছেন। অর্থের অভাবে নিজে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেননি, কিন্তু দুই ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। ছেলেরাও বাবার স্বপ্ন অনেকাংশ পূর্ণ করেছেন। বড় ছেলে শুভদীপ যাদবপুর থেকেই তুলনামূলক সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন। নেটও পাস করেছেন। আপাতত টিউশন করেন। অভিযুক্ত জয়দীপ ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। আপাতত দুই ভাই যাদবপুর থানার অন্তর্গত বিক্রমগড়ে আলাদা বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁদের মা উত্তরাদেবী দীর্ঘদিন ধরে নার্ভের অসুখে ভুগছেন। একেবাসে শয্যাশায়ী। ছেলেদের ভাড়াবাড়ি বা মেসে রেখে তাঁর চিকিৎসা করানো হত।
[আরও পড়ুন: আষাঢ়-শ্রাবণ বিদায় নিলেও এখনই কমছে না বৃষ্টি, সপ্তাহভর উত্তরে জারি কমলা সতর্কতা, কেমন থাকবে কলকাতা?]
৯ আগস্টের রাতের ঘটনা সম্পর্কে জয়দীপ বাড়িতে জানিয়েছিলেন বলে দাবি বাবা বংশীলাল ঘোষের। তিনি বলছেন, হস্টেলে খারাপ ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রটির যাতে ভাল চিকিৎসা হয়, তার জন্য হাসপাতালেও গিয়েছিলেন জয়দীপ। বাবার সঙ্গে নিয়মিত কথা হত ছেলের। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চান বলেও বাবাকে জানিয়েছিলেন জয়দীপ। গত ১৭ আগস্ট কেতুগ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন। কিন্তু ১৮ আগস্টও ফের কলকাতায় ফিরে আসেন। কারণ সংবাদমাধ্যম মারফত তিনি জানতে পারেন, পুলিশ তাঁকে ডাকতে পারে। এরপর ১৯ আগস্ট রাতে ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানতে পারেন বংশীলাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “ছেলে কোনওভাবেই এধরনের কাজে যুক্ত থাকতে পারে না। আর যদি সত্যিই যোগসাজশের প্রমাণ মেলে তাহলে ছেলের কড়া শাস্তি হোক।”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্তা করা হয়েছিল। সেই সময় জয়দীপ ঘোষ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এমনকী, ছাত্র আন্দোলনের একেবারে সামনের সারির সদস্য ছিলেন তিনি। এসএফআইয়ের সক্রিয় সদস্য প্রাক্তনী জয়দীপের আনাগোনা ছিল হস্টেলেও। তবে কি সত্যিই পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত শান্তশিষ্ট জয়দীপ? উত্তর খুঁজছে কেতুগ্রামের কাঁদরা এলাকার বাসিন্দারা।
