সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ডিসেম্বরে কথা ছিল বাড়ি ফেরার। কথা রাখতে পারলেন না ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ান বাপ্পাদিত্য খুটিয়া। লাদাখে শিয়ক নদীতে বাস পড়ে যাওয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। বীর সন্তানের মৃত্যুতে শোকে ভাসছে জওয়ানের পরিবার। নিথর দেহের অপেক্ষায় খড়গপুরের বাসিন্দারা।
২০০৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন খড়গপুরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য খুটিয়া। মা, বাবা, স্ত্রী ও ১১ মাসের কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁর। কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে গত এপ্রিলে বাড়িতে এসেছিলেন বাপ্পাদিত্য। সিয়াচেনে বদলি হচ্ছেন বলে জানান। তবে বদলিতে আপত্তি ছিল পরিবারের। তা শুনতে চাননি বাংলার মায়ের সাহসী সন্তান। কথা দিয়েছিলেন ডিসেম্বরে বাড়ি ফিরবেন। বর্তমান বাড়িটি সংস্কারের কাজ করবেন বলেও কথা দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে আর বাড়ি ফেরা হল না বাপ্পাদিত্যর। কারণ, শুক্রবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাদাখের (Ladakh) শিয়ক নদীতে পড়ে যায় সেনাবাহিনীর একটি বাস। ওই বাসে সওয়ার ছিলেন ২৬ জন জওয়ান। তাঁদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। নিহতদের তালিকাতেই রয়েছেন বাংলার যুবক।
[আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে সর্বস্ব লুট! রায়গঞ্জে প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস]
এছাড়া শহিদ হন সুবেদার শিন্দে, বিজয় রাও সারজেরাও, গুরুদয়াল শাহু, মহম্মদ সইজল টি, সন্দীপ পাল, যাদব প্রশান্ত শিবাজি এবং রামানুজ কুমার। গুরুতর আহত অবস্থায় বাকিদের সেনার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা জওয়ানদের আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ওয়েস্টার্ন কমান্ডের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে মানতে পারছেন না বাপ্পাদিত্যর মা, বাবা-সহ পরিবারের প্রায় সকলেই। চোখের জলে ভাসছেন প্রত্যেকে। বাড়ি ফেরার কথা দিয়ে গিয়েছিলেন ছেলে, বারবার একই কথা বলে চলেছেন শহিদ জওয়ানের মা। ছেলের মৃত্যু যন্ত্রণাদায়ক ঠিকই। তবে বীর জওয়ানের বাবা হিসাবে গর্বিত বাপ্পাদিত্যর বাবা। আর ছেলেকে কখনই ছুঁয়ে দেখা যাবে না। নিথর দেহ গ্রামের ফেরার অপেক্ষায় খড়গপুরের বাসিন্দারা।