দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বাড়ির অমতে ভালবেসে ভিনধর্মের যুবককে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, স্বামীর অত্যাচারে একসঙ্গে থাকতে পারেননি বলে অভিযোগ। ভরসন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগে অস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোন্নগর শ্রীনাথ ঘোষ সরণীতে স্বামী সুলতান আলির গুলিতে মৃত্যু হয় শুভলগ্না চক্রবর্তীর৷ এরপরই অবশ্য অভিযুক্ত যুবক সুলতান আলিকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ৷ আজ, শুক্রবার ধৃত সুলতান আলিকে শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়৷
[কলেজে ভরতির নামে তোলাবাজি, হাতেনাতে পাকড়াও যুবক]
শুভলগ্না ও সুলতানের একই পাড়ায় পাশাপাশি বাড়ি। ছোট থেকেই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব। পরবর্তীকালে তা প্রেমে পরিণত হয়। প্রেমের স্বীকৃতি স্বরূপ দুজনেই ২০১৪-র রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন৷ কিন্তু এই বিবাহে আপত্তি ছিল শুভলগ্নার পরিবারের৷ রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করা সত্ত্বেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাঁরা দু’জনে একসঙ্গে একরাতও কাটাতে পারেননি৷ ২০১৬ পর্যন্ত দু’জনেরই সম্পর্ক ঠিকঠাক ছিল৷ ইতিমধ্যেই, বেকার সুলতান কাজের সন্ধানে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে শুরু করে। ২০১৭ থেকে হঠাৎই দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ওই যুবতী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুলতান।
[ধর্ষণের পর কিশোরীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে খুনের অভিযোগ, বীরভূমের মল্লারপুরে চাঞ্চল্য]
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর থেকেই সুলতান তার প্রেমিকার ফেসবুকে নজরদারি চালিয়ে সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠে। সন্দেহ, ফেসবুকের মাধ্যমে অন্য কোনও যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তার প্রেমিকা। ইতিমধ্যে কাজ না পেয়ে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে সুলতান। তারই মাঝে তার প্রেমিকার সম্বন্ধে দেখাশোনা চলতে থাকে। নভেম্বর মাসে শুভলগ্নার অন্যত্র বিয়েও ঠিক হয়। এরপরই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে সুলতান। প্রেমিকা তথা স্ত্রীকে হারানোর ভয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শুভলগ্নার বাবা তুষার কান্তি চক্রবর্তী ও মা শুভ্রা দেবীর অভিযোগ সুলতান প্রায়শই বাড়িতে এসে তার মেয়েকে প্রাণে মারার হুমকি দিত। উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ জানানোর পরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ মৃতের পরিবার৷
[পরকীয়া সন্দেহে সালিশি সভা বসিয়ে গৃহবধূকে বেধড়ক মার, কাটা হল মাথার চুল]
অন্যদিকে, নিজের স্ত্রীকে অন্য ঘরে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারবেন না বলে সুলতান তাকে খুনের জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি পিস্তলও কেনে৷ তারপরই ঘটে বিপত্তি৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলি চালিয়ে নিজের স্ত্রীকে খুন করে সুলতান। পুলিশি জেরায় সুলতানের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিতে স্তম্ভিত পুলিশ আধিকারিকরা। সুলতান জেরায় জানিয়েছে, তার যা শাস্তি তা হবেই। তাই এখন মরলেও সে নিশ্চিন্তে মরতে পারবে এই ভেবে, যে তার স্ত্রীকে আর অন্য কারোর হবে না৷ অন্য কেউ তাকে নিজের করে পাবে না। পুলিশের অনুমান, অত্যধিক আবেগপ্রবণ হয়েই সুলতান একাজ করেছে৷
The post ভালবেসে বিয়ে করেও কেন খুন শুভলগ্নাকে? চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি সুলতানের appeared first on Sangbad Pratidin.
