দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতী ও অমর্ত্য সেনের জমি বিবাদের শুনানির দিন ফের পিছিয়ে গেল সিউড়ি জেলা আদালতে। আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সুতরাং জমি কার, সেটার এখনও মীমাংসা হল না। জমিজট রয়েই গেল। জল আগেই গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ নোটিস পাঠায় অমর্ত্য সেনকে। আগেই উচ্ছেদ নোটিসে বিজ্ঞপ্তি জারি করার অধিকার আছে কিনা, স্টেট অফিসারের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রশ্ন তোলেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবী সৌমেন্দ্র রায়চৌধুরী। শনিবার উচ্ছেদ নোটিসের বিজ্ঞপ্তি বৈধতা এবং সম্পত্তি আধিকারিকে এক্তিয়ার বিষয়ক কোন প্রয়োজনীয় কাগজ আদালতে জমা না করতে পারলে মামলাটি এদিনের মতো স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ি প্রতীচীর ১৩ ডেসিমল জমি খালি করার নির্দেশ দেয় বিশ্বভারতী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমি খালি না করলে, তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিসও দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় বিদ্বজ্জনেদের একাংশ। বিশ্বভারতীর ভূমিকার প্রতিবাদে দেওয়া হয় সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের ডাক। এলাকায় মিছিল ও মানববন্ধন করে সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি। তিনদিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করে বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি। তাদের শামিল হন রাজ্যের শিল্পী-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে প্রবীণ আসমিক ও প্রাক্তনীরা।
[আরও পড়ুন: বাংলাকে শান্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন শাহ, দিল্লি থেকে ফিরেই জানালেন সুকান্ত]
শনিবার সিউড়ি জেলা আদালতে বিচারক সুদেষ্ণা দে চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে দুপুর ২টোয় শুনানি শুরু হয়। অমর্ত্য সেনের আইনজীবী সৌমেন্দ্র রায়চৌধুরী উচ্ছেদ গেজেটে নোটিফিকেশন পেশ সম্পত্তি আধিকারিকের এক্তিয়ার বিষয়ক বৈধ কাগজ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন। পালটা বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস কেন্দ্র সরকারের গেজেট নোটিফিকেশন জমা করার প্রসঙ্গ তোলেন। বিশ্বভারতীর পেশ করা উচ্ছেদ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বৈধতা যাচাই করার জন্যই পরবর্তী শুনানি দিন ২১শে জুলাই ধার্য করেন বিচারক সুদেষ্ণা দে চট্টোপাধ্যায়। অমর্ত্য সেনের আইনজীবী সৌমেন্দ্র রায়চৌধুরী জানান, “স্টেট অফিসার কি করে উচ্ছেদ নোটিশ দিতে পারেন। আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি।একটি নথি জমা করতে পারেনি বিশ্বভারতীর আইনজীবীরা।”
অন্যদিকে, বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস বলেন, “স্টেট অফিসার বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের গেজেট নোটিফিকেশন আদালতে জমা করেছি আগেই। গেজেট নোটিফিকেশনকে চ্যালেঞ্জ করেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা। পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টে নির্দেশ রয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অমর্ত্য সেনের জমি দখল করতে পারবে না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাই অহেতুক দেরি করছেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা। মামলা নিষ্পত্তি একদিন হবেই। জয় বিশ্বভারতীই হবে।”
