দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ক্যানিংয়ে (Canning) তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ৩ জনের হত্যাকাণ্ডে প্রথম গ্রেপ্তার। পুলিশের জালে ধরা পড়ল আফতাবউদ্দিন শেখ। শুক্রবার রাতে কুলতলি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ক্যানিং থানার পুলিশ। মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার আদালতে তোলা হবে আফতাবউদ্দিনকে।
একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে গত বৃহস্পতিবার খুন হন পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝি এবং তাঁর দুই সহকর্মী ঝন্টু হালদার ও ভূতনাথ প্রামানিক। শুক্রবার ঘটনার তদন্তে গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের সিট (SIT)। আর ঠিক ওই রাতেই ক্যানিংয়ে তিন তৃণমূল নেতা-কর্মী খুনের তদন্তে নেমে একজনকে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারীরা। আফতাবউদ্দিন শেখ নামে ওই অভিযুক্তকে কুলতলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত আফতাবউদ্দিন এফআইআরে নাম থাকা বশির শেখের দাদা।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার বিয়েতে ঢুকে পাত্রের সামনেই সিঁথিতে সিঁদুর, গণধোলাই খেলেন যুবক, তারপর…]
তদন্তকারীদের সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, দিনতিনেক আগে স্বপন মাঝিকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। ধর্মতলার একটি মাঠে বসেই খুনের ছক কষেছিল অভিযুক্তরা। ঠিক হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকালেই হবে অপারেশন। সে কারণে বুধবার রাত থেকে স্বপনবাবুর গতিবিধির উপর তীক্ষ্ম নজর ছিল আফতাবউদ্দিনের। ওইদিন তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কারাই বা সঙ্গে রয়েছে – সে সমস্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য খুনের ষড়যন্ত্রকারীদের দিতে থাকে আফতাবউদ্দিন। বৃহস্পতিবার সকালেও বেরনোর পর থেকে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝির উপর নজরদারি চালায় ধৃত। এমনকী বাইকে চড়ে তাঁকে অনুসরণও করতে থাকে সে। এরপর ধর্মতলার পিয়ার পার্কের কাছে সব শেষ। দুষ্কৃতীদের গুলি এবং ধারাল অস্ত্রের কোপে প্রায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় স্বপন মাঝি এবং তাঁর দুই সঙ্গীর শরীর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিনজনের।
নিহত স্বপন মাঝির দাদা মধু মাঝি ক্যানিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রফিকুল সর্দার, জালালউদ্দিন আখন্দ, বশির শেখ, বাপি মণ্ডল, এবায়দুল্লাহ মণ্ডল ও আলি হোসেন লস্করের নাম রয়েছে এফআইআরে। ওই ছ’জনকে পাকড়াও করতে পারেনি পুলিশ। তবে আফতাবউদ্দিন শেখকে মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতকে শনিবার তোলা হবে আদালতে। তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা তদন্তকারীদের। আফতাবউদ্দিনকে জেরা করে অন্যান্য অভিযুক্তদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ।