অমিত কুমার দাস: চুয়াড় বিদ্রোহ ও তার নেত্রী রানি শিরোমনি বললেই উঠে আসে কর্ণগড়ের (Karnagarh) কথা। সিংহ জমিদার( রানির) গড় যেখানে সেই অঞ্চল রানি শিরোমণি গড় বলে পরিচিত। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখানে সংস্কারের কাজ চলছেই। সঙ্গে ছড়াচ্ছে গুজব ও মিথ্যা তথ্য। এই পরিস্থিতিতে ভ্লগারদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, তারা যেন ভুল তথ্য না ছড়ান।
সম্প্রতি সংস্কারকার্যের সময় মাটি সরিয়ে দেখা গিয়েছিল এখানে প্রাচীন একটি মন্দিরের স্থাপত্য আছে। দেখা গিয়েছিল দেওয়ালে খোদাই করা 'ষড়ভূজ চৈতন্য মূর্তি'। রাজ্য সংরক্ষিত স্থাপত্যগুলি সংস্কারের সময় উদ্ধার হয়েছে একাধিক স্তম্ভ। ওই সময় গড়ে ভিড় জমিয়েছিলেন একাধিক ভ্লগার। করেছিলেন লাইভ। দাবি করা হয়েছিল খননকার্য চলছে। যা সম্পূর্ণ ভুল। শুধু তাই নয়, জীর্ণ স্থাপত্যে উঠে লাইভ করা ও রিল বানানোর ফলে স্থাপত্যগুলি ক্ষতিগ্রস্ত-ও হতে পারত। চলছিল ইতিহাস নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারও। সে সব ঠেকাতে স্থাপত্যগুলি ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ঢোকা ও ওঠার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সংস্কারের জন্য ঘিরে দেওয়া হয়েছে স্থাপত্যগুলি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সংস্কারের কাজ চলছে। ইতিহাস টিকিয়ে রাখতে পর্যটকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি জীর্ণ ধ্বংসস্তূপ সংস্কার চলছে। সেখানেও স্থাপত্যের নিদর্শন মিলেছে। শিরোমণিগড়ের প্রাচীন স্থাপত্যগুলির প্রত্নতাত্ত্বিক ও ওই অঞ্চলের হেরিটেজ মর্যাদার আবেদনকারী তথা রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক নিসর্গ নির্যাস মাহাতো সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, "আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতর উদ্যোগী হয়েছে। সংস্কারের কাজ চলছে। জেলার হেরিটেজ সার্কিটেও এই অঞ্চলের নাম জুড়েছে। হেরিটেজ কমিশন বাড়তি নজর দিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও আধিকারিকদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেওয়া উচিত।"
সন্দীপ সিংহ বলেন, "রাজ্য সরকার সংস্কারের কাজে বিশেষ নজর দিয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সাংসদ জুন মালিয়ার আর্থিক সহযোগিতা ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বিশ্রামাগার গড়ে তোলা হচ্ছে।" রানি শিরোমণি নিয়ে গবেষণা করেছেন আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত। তিনি বলেন, "ভালো ভাবে সংস্কারের কাজ হওয়া উচিত। শীঘ্রই রানি শিরোমণি নিয়ে সংকলন প্রকাশিত হবে।" সিলেবাসেও কর্ণগড় ও রানি শিরোমণি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে তিনি আশাবাদী। শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ বলেন, "সকলে গড়ে আসুন। তবে জীর্ণ স্থাপত্যে উঠবেন না। ইতিহাসকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করুন।"
