ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে পাওয়ার মতো অবস্থা। মামুলি এক মামলায় চিৎপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল এক ব্যক্তিকে। তাকে জেরা করতেই মিলল দু-দুটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত, পলাতক খুনির সন্ধান। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থেকে গ্রেপ্তার হাবড়ায় জোড়া খুনের ঘটনার আসামি সুকুর আলি মণ্ডল। আপাতত সে পুলিশের হেফাজতে।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর এবং ১৯ নভেম্বর। হাবড়া আম্বেদনগর ও লক্ষ্মীপুরে খুন এক বৃদ্ধা এবং এক সোনা ব্যবসায়ী। দু’টি খুনের মধ্যে যে কোনও যোগসূত্র আছে, তা বোঝাই যায়নি। আলাদা ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেই তদন্ত শুরু হয়। খুনি ধরা পড়েনি। বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়িয়েছে। এরপর সম্প্রতি চিৎপুর থানার পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করতেই মেলে সুকুর নামে এক ব্যক্তির সন্ধান। তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে সুকুর এই ধৃত ব্যক্তির সঙ্গে এক নেশার আড্ডায় ছিল। নেশার ঘোরেই সে বলে ফেলেছে যে কীভাবে হাবড়ায় দু’টি খুন করেছে।
[আরও পড়ুন: নদীর ধার থেকে উদ্ধার নরকঙ্কাল, DNA পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণের পথে সিআইডি]
জানা যায়, খুনে অভিযুক্ত সুকুর নামে ওই ব্যক্তি নেশার জন্য চুরি, ছিনতাই করত। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য সে হাবড়ার আম্বেদনগরের এক বৃদ্ধার বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছিল। তখনই তার নজরে আসে যে ওই বৃদ্ধার গলায় মোটা একটি হার। মুহূর্তের মধ্যে সে হারটি ছিনতাইয়ের জন্য বৃদ্ধাকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। দ্বিতীয় ঘটনা ১৯ নভেম্বরের। লক্ষ্মীপুর এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রমেশ কর্মকারের কাছে সুকুর ওই হারটি বিক্রি করতে যান। দেখে সন্দেহ হয় রমেশবাবুর। তিনি সুকুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। সুকুর বুঝতে পারে যে তার কারসাজি ধরে ফেলছেন ব্যবসায়ী। আক্রোশবশত তাঁর মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে। এরপর সুকুর ফের নিজের মতো নেশার জগতে ডুবে যায়। পুলিশ তার নাগাল পায়নি।
[আরও পড়ুন: ঝাড়ফুঁকে শিশুমৃত্যুতে গ্রেপ্তার ওঝা, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক]
জট খুলল প্রায় তিন মাস পর। চিৎপুর পুলিশের সহায়তায় দত্তপুকুর থেকে সুকুর আলি মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে হাবড়া থানার পুলিশ। আদালতে পেশ করার পর খুনের মামলা রুজু করা হয় তার বিরুদ্ধে। সুকুরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে দু’টি খুনের ব্যাপারে আরও জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
The post নেশার খরচ জোগাতে জোড়া খুন, হাবড়ায় পুলিশের জালে সিরিয়াল কিলার appeared first on Sangbad Pratidin.
