অর্ণব দাস, বারাসত: টিউশন ক্লাসের সকলে মিলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল তারা। বেরনোর পর শিক্ষক বলেছিলেন গ্রুফি তুলতে। তবে তাতে আপত্তি জানায় দুজন। তার ফলে দুই পড়ুয়াকে বকাঝকা করেন শিক্ষক। এই ঘটনার পরদিন দুপুরেই ঘর থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পরিবারের দাবি, শিক্ষকের বকাঝকার পর থেকে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। সে কারণে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আতপুরের ২ নম্বর বঙ্কিমনগরের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মৃত রাজা দে। ভাটপাড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আতপুরের ২ নম্বর বঙ্কিমনগরের বাসিন্দা। শ্যামনগর কান্তিচন্দ্র হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, ওই স্কুলেরই পার্শ্বশিক্ষক তন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বাংলার টিউশন পড়ত ওই পড়ুয়া। মৃতের সহপাঠী সুব্রত আঢ্য জানায়, ওই ব্যাচের অন্যান্য সহপাঠীদের নিয়ে রানাঘাটের একটি প্রেক্ষাগৃহে 'খাদান' সিনেমা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষক। সিনেমা শেষে সকলে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরন। শিক্ষক গ্রুফি তুলতে বলেন। কিন্তু ওই দলে থাকা দুই পড়ুয়া গ্রুফি তুলতে রাজি হয়নি। ছবি তুলতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষক ওই দুজনকে বকাঝকা করেন।
পরিবারের দাবি, সিনেমা দেখে মনমরা হয়ে বাড়ি ফেরে রাজা। শিক্ষকের বকাঝকার বিষয়টি বাড়িতে জানায় সে। পরদিন ঘরের দরজা বন্ধ অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ ছিল রাজা। তাতেই সন্দেহ হয় পরিবারের লোকজনের। দরজা ধাক্কা দেওয়ার পরেও কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি দরজা ধাক্কা দিয়ে খোলা হয়। ভিতরে ঢুকে তাঁরা রাজার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। মৃতের বাবা সুব্রত দে-র দাবি, অপমান সহ্য করতে না পেরে হয়তো রাজা আত্নঘাতী হয়েছে। ছাত্রের মা লতাদেবীর অভিযোগ, "ছেলেকে একাধিকবার অপমানকে করেছিলেন তন্ময় স্যার। একদিন বাড়িতে এসেও স্যার ছেলেকে অপমান করেছিলেন। দিনের পর দিন অপমান সহ্য করতে না পেরেই ছেলে আত্মহত্যা করেছে।" এই ঘটনায় শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্রের পরিবারের লোকজন।