অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হাওড়ায় (Howrah) বার্ষিক গ্রামসভার অনুষ্ঠান চলাকালীন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানকে এক ব্যক্তি একটি দোনলা বন্দুক উপহার দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দিনভর সোশাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ভাইরাল হতেই তৈরি হল রাজনৈতিক বিতর্ক। উঠল নানা প্রশ্ন। ওই পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি বন্দুকটি ভালো করে দেখেননি। সম্ভবত বন্দুকটি খেলনা ছিল।
বুধবার হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়ার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামসভার অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকড়ার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আখতার হোসেন মোল্লা-সহ পঞ্চায়েত ও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রামসভার ওই অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত প্রধান আখতার হোসেন মোল্লাকে অনেক ব্যক্তি এসে নানা ধরনের উপহার দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যেই এক জন এসে একটি দোনলা বন্দুক উপহার দেন। প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে এভাবে পঞ্চায়েত প্রধানকে দোনলা বন্দুক উপহার দেওয়ায় নানা প্রশ্ন ওঠে। তৈরি হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান আখতার হোসেন মোল্লা অবশ্য এদিন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গ্রামসভার উৎসবে আমার এক বছরের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে অনেকে আমাকে সম্মান দিতে নানা উপহার দেন। একজন একটি বন্দুকও দেন। আমি শুধু বন্দুকটি হাতে নিয়েছি। বন্দুকটি কী তা দেখার পরিস্থিতি ছিল না। অন্য উপহারের মতোই অন্য এক জন আমার হাত থেকে বন্দুকটি নিয়ে অন্য জায়গায় রেখে দেয়। কিছু বোঝার মতো সময় আমি তখন পাইনি। তবে বন্দুকটি দেখে মনে হয়েছে বন্দুকটি খেলনার ছিল।’’
একই সঙ্গে সরকারি মঞ্চ থেকে এভাবে বন্দুক উপহারের বিষয়টি যে সঠিক হয়নি তা স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারি মঞ্চ থেকে এ ধরনের উপহার হওয়া উচিত ছিল না। ভুল হয়েছে, আমার এই বিষয় আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিলো। আমি ৩০ বছর রাজনীতি করছি। আমার আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিলো। এ ধরনের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়।’’
এই প্রসঙ্গে ডোমজুড় কেন্দ্র তৃণমূলের সভাপতি তথা হাওড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তাপস মাইতি বললেন, ‘‘আমি বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি ঠিক কী হয়েছে। যদি সত্যিকারের বন্দুক হয়ে থাকে তাহলে দল সে ব্যাপারে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’এদিকে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। এই প্রসঙ্গে বিজেপির হাওড়া জেলার নেতা উমেশ রাই বলেন, ‘‘তৃণমূল বুঝেছে মানুষ তাঁদের পাশে নেই। তাই যত বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে তত এভাবে নেতারা অস্ত্র প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে চাইছে। কিন্তু মানুষ এর উত্তর ভোটবাক্সের মাধ্যমে তৃণমূল নেতাদের দেবে।’’
