শান্তনু কর ও বিধান নস্কর, জলপাইগুড়ি ও দমদম: দাম্পত্য অশান্তির মাঝে রাজ্যের দুই প্রান্তে স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় সাতসকালে ছড়াল চাঞ্চল্য। আর খুনের পর থানায় আত্মসমর্পণ করলেন স্বামীরা। প্রথম ঘটনা জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি (Dhupguri) এলাকার। রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়াঝাঁটির মাঝে স্ত্রীকে অত্যাচার। স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধানখেতের মধ্যে কুপিয়ে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আবার স্বামী থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। দ্বিতীয় ঘটনা রাজারহাটের (Rajarhat) নারায়ণপুরের। সেখানেও একই কারণে স্ত্রীকে গুলি করে খুনের পর থানায় আত্মসমর্পণ করে স্বামী। দুটি ঘটনাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে দু’জনকে।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, বিবাদ লেগেই ছিল। কিন্তু তা যে এত ভয়াবহ আকার নেবে, ভাবতে পারেননি কেউ। সেই ঝগড়াঝাঁটির মাঝেই সোমবার ভোররাতে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন (Stab to death) করে, পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করল স্বামী। সকালে ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির বারোঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বোড়াগাড়ি এলাকায়। অভিযুক্ত স্বামী ভূপালচন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাড়ির পাশের ধানক্ষেত থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অক্ষবিক্ষত স্ত্রী ফনীবালা রায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: মোদির ডাকে সাড়া! জম্মু-কাশ্মীরের বাড়িতে তেরঙ্গা ওড়ালেন হিজবুল জঙ্গির ভাই]
জানা গিয়েছে, রাত থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল। ভোররাতে তা চরম আকার নেয়। পরিবার ও প্রতিবেশীরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখনই স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র হাতে তাড়া করে বাড়িছাড়া করে ভুপাল। প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রী পালাতে গিয়ে ধানখেতের মধ্যে পড়েন। সেখানেই কুপিয়ে খুন করা হয় তাকে। ঘটনা চেপে রাখেনি অভিযুক্ত ভুপালচন্দ্র রায়। এমনকি পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেনি। প্রতিবেশীদের ডেকে ঘুম থেকে তোলার পাশাপাশি বউমাকে ডেকে গোটা ঘটনা জানায় সে। এরপর পুলিশ এসে বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি নিয়ে এসেছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: খুনের মামলায় অপরাধীদের সন্ধানে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, বেধড়ক মার ক্ষুব্ধ জনতার]
এদিকে, রাজারহাটের নারায়ণপুরের চন্দ্রানি এলাকায় স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। এদিন ভোররাতে আচমকা স্ত্রী টুম্পা ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি করে স্বামী অজয় ঘোষ। দুটি গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় টুম্পাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তাঁর। খুনের পর স্বামী অজয় ঘোষ নারায়ণপুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ (Surrender) করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন। অভিযুক্ত পেশায় একজন প্রোমোটার ছিলেন বলে জানা যায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নারায়ণপুর থানার পুলিশ। বিধাননগরের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা নারায়ণপুর থানায় পৌঁছেছে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী এমন ঘটেছিল যার জেরে স্ত্রীকে গুলি করে খুন করতে হল? আগ্নেয়াস্ত্রই বা সে কোথায় পেল? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় পুলিশ।