বিপ্লব চন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: জালিয়াতির এ আর এক অভিনব পন্থা৷ কন্যাশ্রীর মাধ্যমে জালিয়াতি করে টাকা কামানোর পথ খুঁজে নিয়েছিল এক কলেজ-কর্মী ও তার ছেলে। যারা আদৌ কলেজ-ছাত্রীই নয়, তাদের নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর দেখিয়ে কন্যাশ্রীর টাকা তুলে নেওয়ার ফন্দি এঁটেছিল তারা। জালিয়াতিতে আরও একজন যুক্ত বলে অভিযোগ। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। জালিয়াতি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই কলেজ-কর্মীর ছেলেকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম দেবজ্যোতি সরকার। তার বাবা নদিয়ার রানাঘাট কলেজের কর্মী।
[চাঁদার জুলুমবাজদের খপ্পরে পড়েও পুলিশের বদান্যতায় শেষরক্ষা ব্যবসায়ীর]
ইতিমধ্যেই রানাঘাটের মহকুমা শাসক মণীষ বর্মা ওই ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন জেলাশাসকের কাছে৷ ওই কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজের ছাত্রীদের কন্যাশ্রীতে নাম তালিকাভুক্ত করার দায়িত্ব কলেজেরই একজন কর্মীকে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, রানাঘাট কলেজে যেহেতু কর্মী সংখ্যা কম, তাই সাইবার কাফে গিয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে হবে ছাত্রীদের। এদিকে কলেজের যে কর্মী কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন, তার ছেলে দেবজ্যোতি হালদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রানাঘাট শহরে একটি সাইবার ক্যাফে চালায় সে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মানুয়ায়ী, সাইবার কাফেতে ছাত্রীরা নাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে কন্যাশ্রী নাম নথিভুক্ত করান। এরপর সেই ফর্ম স্ক্যান করে কলেজের লগ ইন আইডিতে আপলোড করা হয়। এরপর সেই ফর্মের সফট কপি পৌঁছে যায় কলেজে। সাইবার কাফেতে ফর্ম আপলোড করার পর ফর্মটি চলে যায় কলেজে। সেই নিয়মে রানাঘাটে কলেজে যেসব ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের নাম নথিভুক্ত করার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন, তাঁদের ফর্ম পৌঁছে গিয়েছিল সাইবার ক্যাফের মালিক দেবজ্যোতির বাবার কাছে। কিন্তু, ছাত্রী এমন দশজনের নামও তিনি কন্যাশ্রী প্রকল্পে নথিভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ. এমনকী, তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকাও ঢুকে যায়।
[অলচিকি হরফের স্রষ্টা পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর সমস্ত বই প্রকাশ করবে রাজ্য]
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দশজনের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে। তাদের বয়সও প্রায় চল্লিশের কোঠায়। ইতিমধ্যেই তাদের অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার ঢুকেও গিয়েছে৷ এখন তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য রানাঘাট কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। যাঁরা কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন, তাঁরা গোটা ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন বলে খবর৷ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় রানাঘাটের মহকুমাশাসক মণীষ বর্মাকে৷ তিনি জানিয়েছেন, “পনেরোদিন আগেই তদন্ত করে জেলাশাসককে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কলেজের প্রিন্সিপালের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন কলেজের ওই কর্মী। সম্ভবত কাজের চাপের জন্য প্রিন্সিপাল প্রথমদিকে খেয়াল করেননি। পরে জেনে তিনি নিজেই পুলিশের কাছে এফআইআর করেছেন। পুলিশ তদন্ত করছে।”
The post জাল ছাত্রী, কন্যাশ্রীর নামে জালিয়াতির অভিনব পন্থা appeared first on Sangbad Pratidin.
