নন্দিতা রায় , নয়াদিল্লি: আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ‘মিশন ২২’ লক্ষ্য ধার্য করেছে বিজেপি। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল দেখার পরই দলের শীর্ষনেতৃত্ব আগামী লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে কুড়িটির বেশি আসন পাওয়ার আশা করছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। রাজ্যর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও যে খুবই খুশি সেকথা তিনি নিজেই ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির উঠে আসাকেও অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পদ্মশিবির। তবে, যেখানে রাজ্যের বিয়াল্লিশটি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র দুটি আসন তাদের ঝুলিতে, সেখান অর্ধেকের বেশি আসন পাওয়া যে সহজ কাজ নয় তা মানছেন বিজেপি নেতারা। তবে, হাল ছাড়তে নারাজ তাঁরা। আগামিদিনে পশ্চিমবঙ্গে ভাল ফল করার লক্ষে বিজেপি ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন দলের প্রথমসারির এক নেতা।
[এবার স্কুলের পাঠ্যবইয়ে নরেন্দ্র মোদির ছবি! তীব্র আপত্তি বিরোধীদের]
যেভাবে দীর্ঘদিনের বামশাসিত রাজ্য ত্রিপুরায় বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে সফল হয়েছে সেই ‘ত্রিপুরা মডেল’-কেই এবার পশ্চিমবঙ্গে কাজে লাগাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পাশাপাশি বঙ্গজয়ে তৈরি করা হচ্ছে আলাদা রণকৌশলও। রাজ্যে ভোট শতাংশের হিসেবের কাটাছেঁড়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের থেকে তারা ৯ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে বলেই হিসেব কষেছে দলের ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’। সেই হিসেবে তৃণমূলের ঘর থেকে তার অর্ধেক অর্থাৎ সাড়ে চার শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে আনতে পারলেই পশ্চিমবঙ্গে গেরুয়া শিবিরের জয় কেউ আটকাতে পারবে না বলেই মনে করছে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজেপি যে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই মিলেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী বিজেপির সদর দফতর থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কোনও রাজ্যের নির্বাচনের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করার অসুবিধা থাকায় দলের মঞ্চকেই মোদি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আক্রমণ করার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই মোদির কড়া মনোভাব দেখার পর চাঙ্গা বিজেপি শিবির। বিজেপি সুত্রের খবর, মোদির পাশাপাশি অমিত শাহও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করতে হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
[মন্দিরে নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহ, ম্যানেজারকে অর্ধনগ্ন করে প্রহার ক্ষিপ্ত জনতার]
নরেন্দ্র মোদি ‘লুক ইস্ট’ নীতির কথা বারবারই বলে থাকেন। কেন্দ্রের কাছে পুবের দিকে তাকাও নীতি দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে অর্থনীতি ও অন্যান্য সবদিক থেকেই সবল করার বিষয় নিশ্চয়ই। তবে বিজেপির কাছে এর অর্থ আলাদা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রকৃতপক্ষে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে বিজেপির দখলে আনা এবং লোকসভা ভোটে সেখান থেকে বেশি আসন পাওয়াই বিজেপির লক্ষ্য বলে মত তাঁদের। কারণ, গত লোকসভায় উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিজেপি যে বিপুল সংখ্যক আসন পেয়েছিল আগামী লোকসভা নির্বাচনেও সেই ছবিই দেখা যাবে এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি থেকে আরও বেশি সংখ্যক আসন পেতে বিজেপি যে মরিয়া তাতে সন্দেহ নেই।
The post ২০১৯-এ বিজেপির লক্ষ্য ‘মিশন-২২’, বঙ্গব্রিগেডের জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা রণকৌশল appeared first on Sangbad Pratidin.