স্টাফ রিপোর্টার: এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadi Murmu) মুখে ‘মমতা দিদি’র স্লোগান। হতভম্ব রাজ্য বিজেপি নেতারা! গেরুয়া বৈঠকে ভারতমাতা কি জয় বলাই সকলের অভ্যাস। কিন্তু দ্রৌপদী মুর্মু তার সঙ্গে মঙ্গলবার যোগ করলেন ‘জয় ভারত, জয় বাংলা’। রাজ্যের দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের কাছে ভোট চাইতে এসে তিনি বলেন, ‘ভারতমাতা কি জয়, জয় ভারত, জয় বাংলা।’ সচরাচর অধিকাংশ সভায় ভাষণ শেষে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন।
সূত্রের খবর, এদিন পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে মমতার সেই জনপ্রিয় স্লোগান এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর মুখে শুনে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন বিজেপি (BJP) নেতারা। শুধু তাই নয়, দৌপদীর গলায় মমতার স্লোগান নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও এদিন জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিন সায়েন্স সিটির কাছে পাঁচতারা হোটেলে রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন দ্রৌপদী। ভাষণের একাংশ বাংলায় বলেন প্রতিবেশী ওড়িশার ভূমিপুত্রী। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বলেন, “বঙ্গ ও কলিঙ্গর সম্পর্ক বহুদিনের। তাই আশা করি বাংলার ২৯৪ জন বিধায়ক ও ৪২ জন সাংসদেরই সমর্থন পাব।”
[আরও পড়ুন: শুটিং চলাকালীন শাহরুখের ‘ডাঙ্কি’র সেটে অশান্তি! ছবি থেকে সরে দাঁড়ালেন চিত্রগ্রাহক]
বিজেপির ৭০ জন বিধায়কের মধ্যে অসুস্থ থাকায় অশোক লাহিড়ী আসতে পারেননি। দলত্যাগী অর্জুন সিংয়ের পুত্র পবনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। নীরজ জিম্বা, মুকুটমণি অধিকারী ও বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাও অনুপস্থিত ছিলেন। ছিলেন না দুই সাংসদ ডা. সুভাষ সরকার ও রাজু বিস্তা। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “যে বিধায়করা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের বিষয়টা বিরোধী দলনেতা বলতে পারবেন।” মঞ্চে সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতোকে ডাকা হলেও, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় উঠতে পারেননি। বিজেপির ৬৮ জন বিধায়ককেই ১৬ জুলাই রাতের মধ্যে কলকাতায় আসতে বলা হয়েছে। ১৭ তারিখ ‘মক পোলিং’-এর প্রশিক্ষণ চলবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, “বিজেপির যা শক্তি তার থেকেও এ রাজ্যে বেশি ভোট আসবে।”
প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, “আগের বার ১৭টি ভোট এখান থেকে বেশি পেয়েছিলেন রামনাথ কোবিন্দ। এবারও দলের শক্তির বাইরের ভোট আসবে। তৃণমূলের অনেকেই ভোট দেবেন।” যদিও বেশি ভোট পাওয়ার বিজেপির দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,“বিজেপিতে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে আসা বহু মানুষ তৃণমূলে আসার জন্য প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় উন্নয়নের মূলস্রোতে যোগ দিতে অনেক বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক জোড়াফুল শিবিরে আসতে চান, তাঁরাই রাষ্ট্রপতি প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে ভোট দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করবেন।”
এনডিএ প্রার্থীকে এদিন বৈঠকে মা কালীর একটি ছবি উপহার দেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিন সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন এনডিএ প্রার্থী। দ্রৌপদীকে স্বামীজির ছবি, বই ও একটি শাড়ি উপহার দেন রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা।