সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ বলা হয় তাঁকে। নরেন্দ্র মোদির পর অনেক বিজেপি কর্মী-সমর্থকই তাঁকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দিল্লির মসনদে দেখতে চান। কিন্তু দিল্লির নির্বাচনে তিনি ডাহা ফেল। কথা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। দিল্লির নির্বাচনে বিজেপির একজন হেভিওয়েট প্রচারক হিসাবে তিনি ময়দানে নেমেছিলেন। কিন্তু ভোটের ফলাফল বেরতেই দেখা গেল, তিনি কোনও মাইলেজই দিতে পারেননি দলকে। য়ে ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি সভা করেছিলেন তার মধ্যে ১১টিতেই হেরেছে বিজেপি। ২টি আসনে জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। সেগুলিও আবার বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।
এবারে যোগীর প্রচারের অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল মেরুকরণ। হিন্দু-মুসলিম, ভারত-পাকিস্তান তো ছিলই, কেজরিওয়ালকে ব্যক্তিগত আক্রমণের পথে হাঁটতেও কসুর করেননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। একটি সভায় তো রেকর্ডই করে ফেলেছিলেন তিনি। ৪৫ সেকেন্ডে ৮বার পাকিস্তানের নাম নিয়েছিলেন যোগী। শাহিনবাগে কেজরিওয়াল বিরিয়ানি সাপ্লাই করেছেন মন্তব্যের জন্য নির্বাচন কমিশন যোগীকে নোটিস পাঠায়। কিন্তু দমেননি তিনি। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের জন্য মুসলিমদের পাকিস্তানে চলে যাওয়ার নিদান দেন যোগী। যা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়।
[আরও পড়ুন: দিল্লিবাসীর মন বোঝেনি বিজেপি, হেরে উলটো সুর কপিল মিশ্রর]
দিল্লিতে যে ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে যোগী প্রচার করেছিলেন সেগুলি হল- পতপরগঞ্জ, সৌরভ বিহার, কিরারি, মেহরৌলি, মুস্তাফাবাদ, হরিনগর, বিকাশপুরী, উত্তমনগর, তুঘলকাবাদ, দ্বারকা, বাদলি, কারাওয়াল নগর, রোহিনী। এদের মধ্যে দলের শক্ত ঘাঁটি রোহিনী ও কারাওয়াল নগরে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। তাও রোহিনীর বিজেন্দর কুমার গুপ্তা দিল্লির বিরোধী দলনেতা এবং কারাওয়াল নগরের বিজেপি প্রার্থী মোহন সিং বিস্ত গতবারও জিতেছিলেন। তাই বলা যায়, ব্যক্তিগত ক্যারিশমাতেই জিতেছেন দুই বিজেপি নেতা।
শুধু যোগীই নন, বিজেপির ২৭০ জন সাংসদ, ৭০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ৪০ জন সেলিব্রিটি প্রচারক প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রয়াসে বিজেপির বিজেপির প্রাপ্তি মোটে ৮টি আসন। নির্বাচনী প্রচারে প্রথম দিকে আম আদমি পার্টির উন্নয়ন মডেলকে টক্কর দেওয়ার জন্য দিশাহীন দেখাচ্ছিল বিজেপিকে। শেষবেলায় শাহিনবাগ, মেরুকরণকে হাতিয়ার করে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপায় গেরুয়া শিবির। কিন্তু যোগীর মতো অনেকেই দিল্লিবাসীর মন জিততে ব্যর্থ। স্থানীয় নেতাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভাব, অতিরিক্ত মোদি-শাহ নির্ভরশীলতা এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাউকে তুলে না ধরা এই বিষয়গুলিও ফ্যাক্টর হয়েছে আপ-এর বিরাট জয়ের ক্ষেত্রে।
[আরও পড়ুন: ‘দেশদ্রোহীদের গুলি করতে বলার মধ্যে ভুল কোথায়?’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি সাংসদের]
The post দিল্লির নির্বাচনে ডাহা ফেল যোগীর ‘গরম ভাষণ’! তাঁর প্রচার করা ১১টি কেন্দ্রে হার বিজেপির appeared first on Sangbad Pratidin.