সুকুমার সরকার, ঢাকা: মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে সরগরম বিশ্ব রাজনীতি। প্রায় আড়াই দশকে এই ‘হাই-প্রোফাইল’ সফরে ‘একচিন নীতি’কে ধাক্কা দিয়েছে আমেরিকা বলেই মনে করছে চিন। এহেন পরিস্থিতিতে তাইওয়ান ইস্যুতে দল ভারী করতে বাংলাদেশকে পাশে চাইছে বেজিং।
তাইওয়ান (Taiwan) ইস্যুতে ঢাকা জানিয়েছে, পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এ ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকর। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তাঁর সরকারের পক্ষে বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন। এদিকে কূটনৈতিক সূত্রে খবর, চিনের বিদেশমন্ত্রীর আসন্ন ঢাকা সফরকালে ৮টি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই সফরে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও আন্তর্জাতিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। আগামী ৬ আগস্ট চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই দু’দিনের ঢাকা সফরে আসছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এসব সমঝোতা ও চুক্তির প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকায় বিদেশমন্ত্রকের আধিকারিকরা কাজ করছিলেন।
[আরও পড়ুন: ‘এখনই মহড়া বন্ধ করুক চিন’, পেলোসির সঙ্গে বৈঠকের পরে কড়া বার্তা জাপানের]
প্রসঙ্গত, ইতিহাস ঘটলে দেখা যায় বাংলাদেশ ও চিনের সম্পর্ক খুব একটা মধুর কোনওকালেই ছিল না। চিরকালই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন (China)। এবার বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা ভেবে বাংলাদেশের সঙ্গে মিতালী করতে তৎপর হয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে চিরশত্রু আমেরিকার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পাকিস্তানকে যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলে বেজিং। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া তো দূরের কথা, তাঁর খুনি মোস্তাক-জিয়া নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানপন্থী সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে হত্যাকাণ্ডকে চাপা দেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল বেজিং। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেউলিয়ার পাকিস্তানের বদলে বাংলাদেশের মন পেতে উদগ্রীব শি জিনপিংয়ের প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবরে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ঢাকা সফরে আসেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা পত্রে সই হয়। চিনা বিদেশমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে এসবের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। ৭ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ওয়াং ই। চিনা বিদেশমন্ত্রী যখন ঢাকায় পৌঁছাবেন, তখন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন কম্বোডিয়া থেকে ঢাকার পথে থাকবেন। সে কারণে তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।