সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে অস্ত্র রপ্তানিতে শীর্ষে আমেরিকা। বিশ্বে হাতিয়ারের ব্যবসায় প্রায় ৩৭ শতাংশ দেশটির দখলে। তারপরই রয়েছে রাশিয়া। কিন্তু এবার বাজার দখলের লড়াইয়ে উঠে পড়ে লেগেছে চিন (China)। বিগত দশকে দেশটি থেকে প্রচুর হাতিয়ার কিনেছে বাংলাদেশ। তবে ‘চিনা মালের’ গেরোয় পড়লে কী দশা হয় তা এখন হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছে ঢাকা।
[আরও পড়ুন: শক্তি বাড়াচ্ছে লালফৌজ, দ্রুত চিনের হাতে আসবে এক হাজার পারমাণবিক অস্ত্র, দাবি রিপোর্টে]
গত কয়েকবছরে চিন থেকে নৌবাহিনীর জন্য টাইপ 053H3 ফ্রিগেট বা রণতরী কিনেছে বাংলাদেশ। বায়ুসেনার জন্য কে-৮ যুদ্ধবিমান, ট্রেনার বিমান ও সেনাবাহিনীর জন্য মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও চিন থেকে কিনেছে ঢাকা। বিগত দশকে এর জন্য প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে হাসিনা প্রশাসন। কিন্তু সেই সমস্ত হাতিয়ারের গুণগত মান ও কার্যক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের ফৌজ। কারণ, একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে রণতরী-সহ অন্য হাতিয়ারগুলিতে। আর সেগুলিকে সারিয়ে তুলতে হাঁড়ির হাল বাংলাদেশের।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশে নৌসেনায় সদ্য যোগ দেওয়া চিনা 053H3 ফ্রিগেটগুলিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। চিনা সংস্থা ‘Poly Technologies Inc’-এর তৈরি রণতরীগুলির ‘ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম’ অর্থাৎ জাহাজের হাতিয়ারগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রণালীতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে সেগুলির কার্যক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, জাহাজগুলির জাইরো কম্পাস ও হেলিকপ্টারে জ্বালানি ভরার সিস্টেমেও গোলযোগ দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে, চিন থেকে কেনা DA-40 বেসিক ট্রেনার বিমানগুলিতেও প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দিয়েছে। কে-৮ যুদ্ধবিমানগুলির হাতিয়ার নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। লক্ষ্য স্থির করে মিসাইল ছুঁড়লেও যন্ত্রপাতি কাজ করছে না। সমস্যা দেখা দিয়েছে চিনের জোগান দেওয়া FM-90 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম নিয়েও।
সবমিলিয়ে, চিনা অস্ত্র কিনে এবার বাংলাদেশ যে বেকায়দায় পড়েছে তা স্পষ্ট। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিতে তৈরি যুদ্ধাস্ত্রের মান অনেক ভাল হয়। কিন্তু সেগুলির দাম বেশি। সেই জায়গায় রণতরী, যুদ্ধবিমান, মিসাইল ইত্যাদি কম দামে জোগান দিচ্ছে চিন। কিন্তু, সেগুলি অত্যন্ত নিম্নমানের হয়। আর কম দামে সেই অস্ত্র কিনে এবার বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ।