সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ন্যাসের পথে পা বাড়িয়ে কিন্নর আখড়ায় মহামণ্ডলেশ্বর পদ পেয়েছিলেন মমতা কুলকার্নি (Mamta Kulkarni)। তবে বলিউডের পর্দায় ঝড় তোলা একসময়কার এই সাহসিনীর সন্ন্যাসগ্রহণ নিয়ে কম চর্চা হয়নি। বিতর্ক শুরু হয়েছিল তাঁর এহেন উচ্চস্তরের পদপ্রাপ্তি নিয়েও। নিন্দে, সমালোচনার জেরেই এবার কিন্নর আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর (Mahamandaleshwar of Kinnar Akhada) পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মমতা। তবে আশ্রমের পদ ছাড়লেও সন্ন্যাস সফর চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন প্রাক্তন অভিনেত্রী।
জানা গিয়েছে, সদ্য সন্ন্যাস নেওয়া মমতা কুলকার্নিকে 'মহামণ্ডলেশ্বর' পদ দেওয়ায় কিন্নড় আখড়ার সংস্থাপক ঋষি অজয় দাস এবং আখড়ার আরেক মহামণ্ডলেশ্বর লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠীর মধ্যে ঘোর দ্বন্দ্ব বাঁধে। সেই আবহেই শোনা যায়, দশ কোটি টাকার বিনিময়ে নাকি মহামণ্ডলেশ্বর পদ কিনেছিলেন মমতা কুলকার্নি। যদিও সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে মমতানন্দ গিরি দাবি করেছিলেন যে, তাঁর কাছে দশ কোটি টাকা তো দূরঅস্ত, ১ কোটি টাকাও নেই। এমনকী গুরুদক্ষিণা স্বরূপ যে ২ লক্ষ টাকা তিনি দিয়েছিলেন, সেটাও ধার করে। সন্ন্যাসিনীর এহেন দাবিতে যদিও চিঁড়ে ভেজেনি। বিতর্ক আরও তুঙ্গে ওঠে, তাঁর নানাসময়ের নানা মন্তব্য নিয়ে। সম্প্রতি নবরাত্রির সময়ে দিনে তিনবেলা যজ্ঞ করে রাতে দু পাত্র মদ্যপান করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। সেই ইস্যু নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এবার যাবতীয় বিতর্কের জেরেই কিন্নর আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মমতা। এক ভিডিও বার্তাতেই তিনি এই ঘোষণা সেরেছেন।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে মমতানন্দ গিরিকে (মমতা কুলকার্নি) করজোড়ে বলতে শোনা যায়, "কিন্নড় আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর পদ থেকে আমি ইস্তফা দিলাম। ২৫ বছর থেকেই আমি যেমন সাধনা করতাম সন্ন্যাসিনী হয়ে, তেমনই থাকব।" প্রসঙ্গত, গত ২৪ জানুয়ারি মহাকুম্ভে যোগ দিয়ে সন্ন্যাস সফর শুরু করেন মমতা কুলকার্নি। সন্ন্যাস নেওয়ার পর তাঁর নাম হয় 'শ্রী যমাই মমতানন্দ গিরি'। এরপরই দুগ্ধ অভিষেকের মাধ্যমে কিন্নড় আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর পদে তাঁকে বসান লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠী। সন্ন্যাস গ্রহণের সময় কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। সেই ছবিও ভাইরাল হয় নেটপাড়ায়। তবে বলিউডের একসময়কার এই অভিনেত্রীর মহামণ্ডলেশ্বর পদপ্রাপ্তি নিয়ে আপত্তি করেন অনেক সাধুসন্তই। রামদেব বাবাও ব্যাঙ্গ্যাত্মক সুরে বলেছিলেন, "আজকাল যাকে তাঁকে ঘাড় ধরে মহামণ্ডলেশ্বর পদে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক যোগসাধনা করে আমরা আজ এই জায়গায় পৌঁছেছি...।" আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা ঋষি অজয় দাসও তাঁকে মহামণ্ডলেশ্বর পদে মেনে নিতে পারেননি। যাবতীয় বিতর্কের জেরে সোমবার নিজেই সেই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মমতা কুলকার্নি।
