সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইনি জটিলতাকে সঙ্গী করেই ৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আলো দেখেছে 'ধুরন্ধর'। যে বলিউড সিনেমা নিয়ে বর্তমানে পাকিস্তান, বালোচিস্তানেও জোর চর্চা। পঁচিশ সালের বক্স অফিস নম্বরের নীরিখে প্রথম সপ্তাহে ছক্কা হাঁকিয়েছে ঠিকই, তবে রিলিজের পরও 'ধুরন্ধর'-এর পিছু ছাড়েনি বিতর্ক। সিনেমা মুক্তির প্রাক্কালে ট্রেলারে 'লিয়ারি'র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দৃশ্য দেখে আপত্তি তুলেছিল পাকিস্তানের একাংশ, এবার রণবীর সিং অভিনীত ছবির এক সংলাপের জন্য 'ভারতবন্ধু' বালোচিস্তান থেকে ধেয়ে এল কটাক্ষ।
সিনেমার এক দৃশ্যে সঞ্জয় দত্তকে বলতে শোনা যায়, "কুমিরদের বিশ্বাস করো কিন্তু বালোচদের নয়...!" আর সেই সংলাপ নিয়েই বর্তমানে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে বালোচিস্তান। সেখানকার মানবাধিকার কর্মী মীর ইয়ার বালোচের অভিযোগ, 'ধুরন্ধর' ছবিতে বালোচদের অপমান করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এহেন সংলাপের মাধ্যমে ভারত-বালোচিস্তান সম্পর্ককেও নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছে সিনেমায়। ২৬/১১ মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ওই মানবাধিকার কর্মী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, "বালোচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা বালোচ বাহিনি কোনওদিন মুম্বই হামলার উদযাপনে মাতেনি। কারণ আমরাও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর সন্ত্রাসলীলার শিকার। তাই ভারতের কথা মাথায় রেখে বালোচরা কোনওদিন 'আল্লা-হু-আকবর' স্লোগান তুলে আইএসআই-এর সঙ্গে যোগ দিয়ে উল্লাসে মাতেনি।" এখানেই অবশ্য থামেননি তিনি।
মীর ইয়ার বালোচের সংযোজন, "'ধুরন্ধর' ছবিতে বালোচিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করা হয়েছে। সিনেমায় এমন কিছু দৃশ্য রয়েছে, যা দেখে দর্শকমহলের মনে হতেই পারে যে ভারতকে রক্তাক্ত করার জন্য বালোচিস্তান থেকেই অস্ত্র পাঠানো হয়েছিল। ছবিতে বলা হচ্ছে যে- কুমিরদের বিশ্বাস করো কিন্তু বালোচদের নয়। কিন্তু আমাদের বালোচদের অভিধানে 'বিশ্বাসঘাতকতা'র মতো কোনও শব্দ নেই। আমাদের সংস্কৃতিতে বলা হয়- এক গ্লাস জলের দাম আমরা একশো বছরের আনুগত্য দিয়ে মেটাই। আর 'ধুরন্ধর'-এ ঠিক উলটোটা দেখানো হয়েছে।" বালোচিস্তানের খ্যাতনামা ওই মানবাধিকার কর্মীর অভিযোগ, "ছবিটা করার আগে আমাদের দেশের আচার, রীতিনীতি, সংস্কৃতি নিয়ে সেরকম গবেষণাই করা হয়নি। আর হ্যাঁ, জাল নোট ছাপানোর যন্ত্র যদি বালোচ গ্যাংস্টারদের কাছে থাকত, তাহলে বালোচিস্তান দারিদ্রের জ্বালায় ভুগত না।"
