সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিচার ব্যবস্থা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির মনোভাবের কড়া সমালোচনা করলেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা (NV Ramana)। বিদেশ সফরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শনিবার তিনি বলেন, সরকারপক্ষ চায় বিচারালয় তাদের সব সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দিক, বিরোধী দলগুলি মনে করে, তাদের বক্তব্যকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, বিচারালয় কেবলমাত্র সংবিধানের কাছেই দায়বদ্ধ, অন্য কারও কাছে নয়।
বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকা সফরে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রামানা। এদিন সানফ্রান্সিসকোতে প্রবাসী ভারতীয়দের একটি সভায় যোগ দেন তিনি। সেখানে বলেন, “চলতি বছরে আমরা স্বাধীনতার ৭৫ তম এবং প্রজাতন্ত্রের ৭২ বছর পালন করছি। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমরা এখনও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও তার ভূমিকার বিষয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নই।” এরপরেই রামানা সোজাসাপটা বলেন, “ক্ষমতায় থাকা দল মনে করে, সরকারের যাবতীয় সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া উচিত বিচার ব্যবস্থার। বিরোধীরা ভাবে, তাদের মতটির পক্ষে রায় দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। এমন মনোভাবের কারণ, সংবিধানের গণতান্ত্রিক কার্যকারিতা সম্পর্কে তারা এখনও সম্পূর্ণভাবে অবগত নয়।”
[আরও পড়ুন: ফের বাংলার সঙ্গে কাশ্মীরের তুলনা! যোগীর সুর এবার স্মৃতি ইরানির গলায়]
বিচারপতি রামানার মতে, সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা রয়েছে। তারা এমন মনোভাবে চলে, যা একমাত্র স্বাধীন প্রতিষ্ঠান বিচার বিভাগকে আদতে ধ্বংস করতে উদ্যত। এরপরেই তার সাফ কথা, “এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে বিচারালয় কেবলমাত্র সংবিধানের কাছেই দায়বদ্ধ।” ভারতে সাংবিধানিক সংস্কৃতির প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা।
[আরও পড়ুন: ‘জম্মু ও কাশ্মীরের সব স্কুল-কলেজের নামকরণ হবে শহিদদের নামে’, ঘোষণা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের]
প্রসঙ্গত, বিচারালয় আর সরকার পক্ষ তথা রাজনৈতিক দলগুলির মতপার্থক্য নতুন কথা না। তবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে বেশকিছু ক্ষেত্রে অন্য নজির দেখা গিয়েছে, মনে করেন অনকেই। বহুক্ষেত্রেই সরকারি সিদ্ধান্তে শিলমোহর দিয়েছে বিচার বিভাগ। রাফাল বিমান কেনা, কৃষি আইন, পেগাসাস মামলায় বিরোধী দলগুলি হতাশ হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রধান বিচারপতির আজকের মন্তব্য তারপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত যেভাবে বিদেশের মাটিতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির সমালোচনা করলেন তিনি, তা সচরাচর দেখা যায় না।