অভিরূপ দাস: দাতার শরীর থেকে কিডনি বের করা হবে। তারপর তা বসিয়ে দেওয়া হবে গ্রহীতার শরীরে। সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘন্টার মতো। পূর্ব ভারতে এই প্রথম এভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন (Kidney Transplant) করছে রোবট। ইস্পাতমানবটির নাম ‘দ্য ভিঞ্চি’। অ্যাপোলো মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ এই পদক্ষেপ। সৌজন্যে হাসপাতালের চার ইউরোলজিস্ট ডা. অমিত ঘোষ, ডা. সুরিন্দর সিং ভাটিয়া, ডা. বিনয় মহিন্দ্রা এবং ডা. ত্রিদিবেশ মণ্ডল।
গত ছ’মাসে ৪ জনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছে ‘ভিঞ্চি দা’। সূত্রের খবর, শহরের আরও চার বেসরকারি হাসপাতালে হাজির এমন চার রোবট। ডা. অমিত ঘোষ জানিয়েছেন, যাঁর শরীরে কিডনি বসে তার তলপেটে প্রায় ১০ ইঞ্চি পেল্লায় ফুটো করতে হতো। কিন্তু রোবটের দৌলতে মাত্র দেড় ইঞ্চি ফুটোতেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী, রোবটের হাত এতই নিঁখুত যে কিডনি প্রতিস্থাপনে জটিলতা অনেক কম। রক্তক্ষরণ নামমাত্র, এমনকী রোগী সুস্থও হচ্ছেন অনেক দ্রুত।
[আরও পড়ুন: মাও গতিবিধির বাড়বাড়ন্ত রুখতে বৈঠক নবান্নে, সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাংলা-সহ ৪ রাজ্যের]
সাধারণ কিডনি অস্ত্রোপচারে খরচ ১০ লক্ষ টাকা। রোবট প্রতিস্থাপনে খরচ লাখ দু’য়েক বেশি। তবে আগামী দিনে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বাড়লে এই খরচ অনেকটাই কমবে বলে মত চিকিৎসকদের। নতুন এই রোবটের দু’টি হাতের একটিতে রয়েছে উচ্চ মেগাপিক্সেলের 3D ক্যামেরা, যা ছোট্ট একটা ছিদ্রের মাধ্যমে পেটে ঢুকে যায়। স্ক্রিনে রোগীর পেটের ভেতরের ঝকঝকে ছবি দেখতে পান চিকিৎসক। রোবটের অন্য হাত অস্ত্রোপচার করে।
আমেরিকার ‘দ্য ভিঞ্চি’ রোবটের হাতের মুভমেন্ট প্রায় মানুষের মতোই। এই মুহূর্তে আমেরিকা থেকে আমদানি করা হয়েছে রোবটগুলি। সূত্রের খবর, দেশের একটি সংস্থাও তৈরি করছে এমন যন্ত্রমানব। তা বানাতে খরচ হচ্ছে ৫ কোটির মতো। ২০২২ সালের শেষেই হয়তো এমন রোবট তৈরি করে ফেলবে দেশীয় সংস্থা। ২৫ বছরের সোমনাথ গুছাইত (নাম পরিবর্তিত) ভুগছিলেন কিডনির অসুখে। এপ্রিলের ১৯ তারিখ তার শরীরে কিডনি বসিয়েছে ‘দ্য ভিঞ্চি’। রোবটের হাতে অস্ত্রোপচার! প্রথমে ভয়ে ভয়ে ছিলেন সোমনাথের পরিবার। এখন তাঁরাও বলছেন, “এক দ্রুত সেরে উঠবে ভাবতেও পারিনি।” চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, খুব শিগগিরি সরকারি স্তরেও রোবটিক কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হবে।