দেবব্রত মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: ফের বিতর্কে আরাবুল ইসলাম। এবার নাম না করে আইএসএফ কর্মীদের হাত-পা গুঁড়ো করে দেওয়ার নিদান দিলেন তৃণমূল নেতা। এখানেই শেষ নয়, বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি না হলে থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
গত মঙ্গলবার ভাঙড়ের কাশিপুর থানার গানিরাইট গ্রামে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সরিফুল মোল্লার স্ত্রী রোশনারা বিবি। ওই ঘটনা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। আইএসএফ অভিযোগ করেছিল, সরিফুল মোল্লা নিজের বাড়িতে মুরগির ঘরের মধ্যে বোমা মজুত করে রেখেছিলেন। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে সেই বোমা ফেটে গুরুতর জখম হন রোশনারা বিবি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে সরিফুল মোল্লা দাবি করেন আইএসএফ তাঁর বাড়ির লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়ে। তাতেই জখম হন তাঁর স্ত্রী। ওই ঘটনার পরই তার বাড়িতে ছুটে যান ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম-সহ অন্যান্যরা। এদিকে এই ঘটনার পর সরিফুল মোল্লা বুধবার ১৬ জন আইএসএফ কর্মীর বিরুদ্ধে বাড়িতে বোমা মারার অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত আইএসএফ কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার গানিরাইট গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল ও জনসভা করে তৃণমূল। ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলামরা।
[আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্রপতি তফসিলি সম্প্রদায়ের বলে আমন্ত্রিত নন?’, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক]
এদিন ওই প্রতিবাদ সভায় আরাবুল ইসলাম বলেন, “যে সমস্ত আইএসএফ কর্মীরা আমাদের দলীয় কর্মীর বাড়িতে বোমা ছুঁড়ল তাঁরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তার না করলে আমরা থানা ঘেরাও করব। আমরা জানি, এখানে কারা কীভাবে সন্ত্রাস করছে। তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে থানা ঘেরাও করা হবে।” ওই সভা থেকেই তৃণমূলকে খারাপ কথা বললে হাত-পা গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। নওশাদের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (এনআইএ) দিয়ে তদন্তের দাবি জানানোর প্রসঙ্গে শওকাত মোল্লা বলেন, “একজন পরিযায়ী পাখি মাঝেমধ্যে এখানে আসেন। তিনি কী জানেন, সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে ওরা আমাদের কর্মীর বাড়িতে বোমা মেরেছে। ইতিমধ্যে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশকে অনুরোধ করব নিরপেক্ষ তদন্ত করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “ভাঙড়ের মাটিতে লড়াই হবে। ১ ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। আপনারা বুক চিতিয়ে লড়াই করুন। যুদ্ধের ময়দানে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে তারা বিশ্বাসঘাতক। আমাদের দলের কেউ কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করছে। আমি তাদেরকে অনুরোধ করব এমন কাজ করবেন না।”
এ বিষয়ে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “যাদের বাড়িতে বোমা মজুত করা ছিল, পুলিশ কেন তদন্ত করে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করছে না? আমি চাই প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। যদি কোনও কারণে নিরাপরাধ কোনও মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় তাহলে আমি এর বিরুদ্ধে আদালতে যাব। যারা প্রকৃত দোষী তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক। ওরা ওদের পুলিশের বিরুদ্ধে থানা ঘেরাও করতেই পারে। চোরের মায়ের বড় গলা।”