চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: লকডাউনে এ রাজ্যে আটকে থাকা ভিনরাজ্যের প্রসূতি কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন। নাম রাখলেন ‘করোনা’। আসানসোলের ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের অতিথিশালায় শনিবার ওই কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তারপরেই প্রসূতি, নবজাতিকা প্রসূতির স্বামী ও তাঁদের ন’বছরের ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।
স্বামীর সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বর্ধমানে চাষের কাজ করে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার নারায়ণপুরের বাসিন্দা সমৃতা সোরেণ। লকডাউনের মধ্যে স্বামী নন্দলাল মূর্মূ ও ছেলে ‘পরিবর্তনকে’ সঙ্গে নিয়ে গর্ভবতী অবস্থায় গ্রামে ফেরার জন্য বর্ধমান থেকে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু আসানসোলে এসে আটকে পড়ে ওই আদিবাসী পরিবার। পুলিশ তাঁদেরকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ঘাঘরবুড়ি মন্দিরের অতিথিশালায় এনে রাখেন। গত ২৫ দিন ধরে সেখানেই তাঁরা আছেন। শনিবার সকাল থেকে সমৃতার প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে মন্দির কমিটির তরফে আসানসোল দক্ষিণ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগেই সেখানে সমৃতা কন্যার জন্ম দেয়। দুপুরের পরে পুলিশ এসে সবাইকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, মা ও মেয়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মতো প্রসূতি, সদ্যজাত-সহ চারজনকেই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
[আরও পড়ুন : করোনা পরীক্ষার সবচেয়ে সস্তার কিট বানাল বাংলা, চেয়ে পাঠাল WHO]
সমৃতা ও নন্দলাল বলেন, “করোনা ভাইরাসের জন্য লকডাউনে আটকে পড়েছি। তাই মেয়ের নাম রাখছি ‘করোনা’। ৯ বছর আগে ২০১১ সালে বর্ধমানেই আমাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। তখন রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া ছিল। তাই তার নাম রাখা হয় পরিবর্তন।” আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার ডাক্তার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “চারজনকেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়েছে। রবিবার তাদের লালারস পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হবে। তার রিপোর্ট আসার পরে স্বাস্থ্য দপ্তর তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।”
[আরও পড়ুন : করোনা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত নার্স, সিল করে দেওয়া হল হাসপাতাল]
The post ১১ বছর আগে ‘পরিববর্তন’-এর জন্ম দিয়েছিলেন, এবার প্রসূতির কোলে এল ‘করোনা’ appeared first on Sangbad Pratidin.
