আলাপন সাহা: চেন্নাই সুপার কিংসকে নিয়ে একটা কথা বারবার বলা হয়-ড্যাড'স আর্মি। অর্থাৎ টিমে তিরিশোর্ধ্ব ক্রিকেটারের সংখ্যা বেশি। কিন্তু এবারের আইপিএল নিলাম একটু যেন ব্যতিক্রম হয়ে রইল। চেন্নাই প্রায় তিরিশ কোটি খরচ করে যে দু'জন ক্রিকেটারকে কিনল, তাঁদের সম্মিলিত বয়স চল্লিশ হবে না। কার্তিক শর্মার বয়স উনিশ। আর প্রশান্ত বীর (Prashant Veer)। আনক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশ প্রিমিয়ার লিগ খেলার সময় থেকেই স্কাউটদের নজরে পড়ে যান প্রশান্ত। রবীন্দ্র জাদেজাকে ছেড়ে দেওয়ার পর চেন্নাই একজন বাঁ-হাতি স্পিনার অলরাউন্ডার খুঁজছিল। উত্তরপ্রদেশের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে প্রশান্ত ভালো পারফর্ম করেছেন। জাদেজার বিকল্প তিনি হতে পারেন কি না, সেটা সময় বলবে। তবে তরুণ এই অলরাউন্ডারকে এখন থেকেই 'জাদেজা-টু' বলে ডাকাডাকি শুরু হয়ে গিয়েছে।
ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা। আইপিএল নিলামে টিম পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন প্রশান্ত। কিন্তু তাঁকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর লড়াই এমন পর্যায়ে পৌঁছবে, সেটা ভাবতে পারেননি। বিজয় হাজারে ট্রফির জন্য উত্তরপ্রদেশের ক্যাম্প চলছে। টিমের সঙ্গে বাসে করে ফিরছিলেন প্রশান্ত। বলছিলেন, "জানতাম কোনও না কোনও টিম আমাকে নেবে। কিন্তু এত পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমায় কিনবে, সেটা ভাবতে পারিনি। নিলাম যখন চলছিল, তখন আমরা টিম বাসে ছিলাম। রিঙ্কু সিং, সমীর রিজভি-সহ সবাই ছিল। সবাই খুব খুশি।”
প্রশান্ত নিজে আরও বেশি খুশি। কারণটা অবশ্যই চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার জন্য। আইপিএলে চেন্নাই সবসময় পছন্দের টিম প্রশান্তের। বলেন, “চেন্নাই ম্যানেজমেন্ট যে আমার উপর আস্থা রেখেছে, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি নিজেও চেন্নাইয়ের ভক্ত। আইপিএল চেন্নাই বরাবরই আমার ফেভারিট। ভালো লাগছে সেই টিমের হয়ে খেলতে পারব।” আরও একটা কারণের জন্য উত্তেজিত প্রশান্ত। মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে এক ড্রেসিংরুম শেয়ার করবেন। আগে কখনও ধোনির সঙ্গে দেখার করার সুযোগ হয়নি। প্রশান্তের কথায়, “চেষ্টা করব ধোনিভাইয়ের থেকে যতটা বেশি শেখা যায়। আগে কখনও দেখা হয়নি।"
পারিবারিক আর্থিক পরিস্থিতি খুব একটা স্বচ্ছল নয়। তবে প্রশান্ত ক্রিকেট জীবনে রাজীব শুক্লার প্রচুর অবদান রয়েছে। সেই কথা বারবার বলছিলেন প্রশান্ত। বলেন, "আমার বাবার খুব বেশি রোজগার নেই। রাজীব শুক্লা স্যর প্রচণ্ড সাপোর্ট করেছেন। উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার কথাও বলতে হবে। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। কারণ এত ভালো লোক আমার চারপাশে রয়েছেন। যাঁরা আমাকে প্রতিটা মুহূর্তে সাপোর্ট করেছেন।”
