সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শুধু শোকপ্রকাশ নয়, মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সমস্ত ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু 'ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো হচ্ছে কেন?' এই প্রশ্ন তুলে ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের নেটিজেনরা।
৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia’s death)। তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান, অর্থাৎ কোকোর হাত ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হয়েও রাজনীতি থেকে শতহস্ত দূরে থাকা কোকো পদ্মাপাড়ের ক্রিকেটসংস্কৃতির খোলনলচে বদলে দেন। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট, মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামকে বিশ্বমানের ক্রিকেট মাঠ হিসাবে গড়ে তোলা, আইপিএলের ধাঁচে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের পরিকল্পনা করা, ২০১১ বিশ্বকাপ আয়োজনের নীল নকশা তৈরি-বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতিতে সমস্ত কিছুই করেছেন কোকো।
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড শোকপ্রকাশ করে লিখেছে, 'তাঁর আমলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির কাজ শুরু হয়। তাঁর পরিকল্পনা ও উৎসাহ আজকের সাফল্যের পথ তৈরি করেছিল। ক্রিকেটের পরিকাঠামো তৈরি ও দেশজুড়ে ক্রিকেটের বিস্তার নিয়ে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।' মঙ্গলবার বিপিএলে দু'টি ম্যাচ ছিল। সিলেট টাইটান্সের মুখোমুখি হত চট্টগ্রাম রয়্যালস এবং অন্য ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল রংপুর রাইডার্স। সেই দু'টি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। এই দু'টি ম্যাচ কবে হবে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ঘটনা হল, দু'টি ম্যাচই হওয়ার কথা ছিল সিলেটে। বাংলাদেশি নেটিজেনদের প্রশ্ন, 'ঢাকায় শেখ হাসিনা প্রয়াত হলেন, সিলেটে ম্যাচ বন্ধ কেন?' কিংবা অনেকে বলছেন, 'টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।' নেটিজেনদের বড় অংশের মন্তব্য, 'খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেশানো হচ্ছে।' অনেকের বক্তব্য, 'কোচ প্রয়াত হলে লিগ চলে, তাহলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে লিগ বন্ধ কেন?'
কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, নেটিজেনদের এই 'ক্ষোভে'ও রাজনীতি রয়েছে। এই মুহূর্তে ভোটমুখী বাংলাদেশে খালেদার প্রয়াণ অনেক অঙ্ক ঘুরিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান যেখানে নির্বাচনের পদপ্রার্থী। ফলে খালেদার প্রয়াণ নিয়ে অতিচর্চায় মানুষের মনে যে সহানুভূতি তৈরি হবে, তার প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সে। সেটা কোনও ভাবেই চাইবে না জামাত বা ইনকিলাব মঞ্চের মতো সংগঠন। ফলে খালেদার প্রয়াণ নিয়ে যাতে অতিচর্চা না হয়, সেটার সক্রিয় প্রমাণ হিসেবে বিপিএল বন্ধের 'প্রতিবাদ' বলে মনে করা হচ্ছে।
