সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোয়েব বশিরের বলটা ঠিকভাবেই ডিফেন্স করেছিলেন মহম্মদ সিরাজ। কিন্তু সেটাই যে ঘুরে গিয়ে বেল ভেঙে দেবে, তা বোধহয় নিয়তির লিখন ছিল। হতাশ-ক্লান্ত ভাবে মাটিতে বসে পড়লেন সিরাজ। অন্যদিকে রবীন্দ্র জাদেজার চোখেমুখে একরাশ অবিশ্বাস। মাঠের অন্য প্রান্তে তখন চলছে ইংল্যান্ডের উদ্দাম সেলিব্রেশন। সেখান থেকে ক্রিজের দিকে এগিয়ে এলেন জো রুট, হ্যারি ব্রুকরা। ক্লান্ত-বিধ্বস্ত সিরাজদের দিকে বাড়িয়ে দিলেন সান্ত্বনার হাত। এটাই তো ক্রিকেট, এটাই তো জেন্টলম্যানস গেম!
লর্ডসে পাঁচদিন ধরে উত্তাপ ছড়িয়েছে, সেখানে তখন হিমেল পরশ। কখনও ডাকেটের দিকে তেড়ে গিয়েছেন সিরাজ, লং রুমেও ধাক্কধাক্কি হয়েছে। আবার পন্থকে আউট করে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না জোফ্রা আর্চার। ম্যাচ শেষের কিছুক্ষণ আগেও জাদেজা-সিরাজদের সঙ্গে ব্রাইডন কার্সের 'কুস্তি'। সেসব এখন অতীত। ৬১ রানে অপরাজিত, কিন্তু ম্যাচে পরাজিত যোদ্ধা জাদেজা ফিরে যাওয়ার সময় জড়িয়ে ধরলেন বেন স্টোকস। সিরাজকে টেনে তুললেন হ্যারি ব্রুক। আসলে 'হোম অফ ক্রিকেটে' ঊর্ধ্বে তুলে ধরলেন ক্রিকেটীয় স্পিরিটকে।
আফসোসের বিষয় হল, ছবিটা বিপরীতও হতে পারত। অর্থাৎ, জাদেজা-সিরাজরা ম্যাচ জিতিয়ে ফেরার সময় সান্ত্বনা দিতে পারতেন রুটদের। আর তো মাত্র ২২ রান দরকার ছিল। এত কাছে এসেও ম্যাচ হারতে হল ভারতকে। প্রথমে জশপ্রীত বুমরাহ, তারপর মহম্মদ সিরাজের সঙ্গে পার্টনারশিপ করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন জাদেজা। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর লর্ডস জয় হল না। সিরাজ আর বুমরাহ যদি শেষ দুই উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে অতক্ষণ ক্রিজে না থাকতেন, তাহলে জয়ের এত কাছাকাছি যেতেই পারত না ভারত! ম্যাচটা এত উত্তেজকও হত না। হার-জিতের ঊর্ধ্বে একটা 'খাঁটি' টেস্ট ম্যাচ দেখাও কম প্রাপ্তি নয়।
ও, আরও একটা বিষয়। যে ডিউক বল নিয়ে এত বিতর্ক। সেটাই আশ্চর্যজনকভাবে ঘুরে গিয়ে সিরাজের উইকেট ভেঙে দিল। এটাও কি নিয়তির মার?
