শিলাজিৎ সরকার: ইডেনে লখনউ সুপার জায়ান্টসের অনুশীলন তখন পুরোদমে চলছে। হঠাৎ তিন শ্বেতাঙ্গ হাজির হলেন লোয়ার টিয়ারে। তা ক্রিকেটের নন্দনকাননে বিদেশি আগমন বেশ সাধারণ বিষয় নয়। কিন্তু সেই অতিথিদের দিকে যদি ঠান্ডা জলের বোতল এগিয়ে দেন স্বয়ং এলএসজি কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার, তবে আর তাঁরা সাধারণ থাকেন না।
কথা বলতেই জানা গেল তিন বিদেশির পরিচয়। জন ম্যাকডোনাল্ড, পল ফিগলিও মেনি এবং টড পিয়ারসন। সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারতে এসেছেন বন্ধুত্বের টানে। এরমধ্যে জন এলএসজির অস্ট্রেলীয় তারকা মিচেল মার্শের বন্ধু। ল্যাঙ্গারের স্কুলজীবনের বন্ধু পল। বন্ধুর দলের খেলা দেখতেই ভারতে এসেছেন তাঁরা। পরিকল্পনা ছিল, এলএসজি-র পরপর দু'টো ম্যাচ দেখবেন। এরমধ্যে প্রথমে ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে এলএসজি-র জয় দেখেছেন। কিন্তু তারপর কলকাতায় এসে কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আর দেখা হল না তাঁদের। কারণ সূচি বদলে ম্যাচ মঙ্গলবার সরে গিয়েছে। তাই রবিবার রাতে দেশে রওনা দেন পারথের তিন বাসিন্দা। ইডেনের মতো স্টেডিয়ামে এসে বেশ উচ্ছ্বসিত তিন বন্ধু। স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় ইডেনের দর্শকাসন থেকে ২০০১ সালের ঐতিহাসিক ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট, উঠে এল সব প্রসঙ্গই।
আর সেই আলোচনার মধ্যেই জানা গেল একটা তথ্য। পিয়ারসন শুধু ল্যাঙ্গারদের বন্ধুই নন, একজন সোনাজয়ী অলিম্পিয়ানও! ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে সাঁতারের ৪x২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলে ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন, চার বছর পর এথেন্সে পেয়েছিলেন রুপো। ঘরের মাঠে প্রথম অলিম্পিক সোনা জয়ের ক্ষেত্রে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ডও ভেঙে দিয়েছিলেন পিয়ারসন এবং তাঁর সঙ্গীরা। যার মধ্যে ছিলেন কিংবদন্তি ইয়ান থর্পও। তাঁর মুখে সেই প্রসঙ্গ শুনে পাশ থেকে জন বলে উঠলেন, "দলের চার সদস্যর মধ্যে পলই সবচেয়ে কম সময় নিয়েছিল!” যা শুনে পল বললেন, "আমরা নিজেদের দেশে সমর্থকদের সামনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, সেটাই সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল। কে কতটা সময় নিয়েছিল, সেসব আমরা চিন্তাই করিনি।” সেবার আরও একটা রিলে ইভেন্টে সোনাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন পল। সেই দলের হয়ে হিটে লড়লেও ফাইনালে নামেননি তিনি।
সেই স্মৃতিচারণার মধ্যেও ইডেনে ম্যাচ দেখতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করে গেলেন পলরা। সোনাজয়ী পিয়ারসন বলছিলেন, "ভারতে স্টেডিয়ামে বসে আইপিএল দেখার অভিজ্ঞতা অন্যরকম। এখানে দর্শক এত স্বতস্ফূর্ত! ইডেনে ম্যাচটা দেখার ইচ্ছে ছিল। আশা করছি পরে আবার আসার সুযোগ পাবে।"