সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আল নাসের (Al Nassr) ক্লাবের হয়ে প্রথম গোল পেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo)। কিন্তু তাতেও দল জিতল না। বরং বলা ভাল রোনাল্ডোর গোলে সমতা ফেরাল আল নাসের। গোলটা না পেলে কী যে হত তা বলা মুস্কিল! হয়তো আরও বেশি করে সমালোচিত হতেন। নিন্দুকেরা নখ-দাঁত বের করত। রক্তাক্ত হতেন মহাতারকা। নিজের দীর্ঘ ফুটবলজীবনে এরকম কতই তো রক্তাক্ত হয়েছেন, কতবারই তো প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু প্রতিবারই নিন্দুকদের ভুল প্রমাণিত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ‘সিআর সেভেন’। এবার তাঁর কাজটা কিছুটা কঠিন। তিনি ফেলে এসেছেন তাঁর সোনার সময়। এই ৩৭-এ জেদ আগের মতোই রয়েছে, খিদেও আছে কিন্তু শরীর যে বিদ্রোহ করে বসে। তাজা রক্তের সঙ্গে লড়তে হয়। এই লড়াই আগের থেকেও কঠিন। কিন্তু নামটা যে রোনাল্ডো। অসাধ্যসাধন করতে যে দড়। তাই বয়স বেড়েছে, আগের সময় ফেলে এসেছেন, এই সব বাস্তব মেনে নিয়েও বলতে ইচ্ছা করে, রোনাল্ডো ফর এভার। তিনি মাঠে নামলে এখনও প্রতিপক্ষের ভীতির কারণ। এখনও তিনি গৃহস্থের গর্ব, পড়শির ঈর্ষা। তাই নব্বই মিনিটের খেলায় তিনি ভুলচুক করলেও, কোন সময়ে যে গোল করে যাবেন, তার হদিশ কেউই জানেন না। রোনাল্ডো এমনই। তাঁকে অবহেলা করা যাবে না।
আরব দেশে পৌঁছনোর পরে গোলের দেখা পাননি রোনাল্ডো। প্রীতি ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন ঠিকই ‘সিআর সেভেন’, কিন্তু সেটা তো প্রীতি ম্যাচ। ক্লাবের জার্সিতে নেমে গোল নেই তাঁর নামের পাশে। সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আল নাসের কর্তা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন, ”শুধু কি সিউউ বলার জন্য রোনাল্ডোর পিছনে দুশো মিলিয়ন খরচ করা হয়েছে।” অসন্তুষ্ট দর্শকরা রোনাল্ডোর জার্সির উপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছেন এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: হোটেলের প্রবেশ পথে কপালে তিলক নিতে অস্বীকার, নেটদুনিয়ার রোষানলে সিরাজ-উমরান!]
রোনাল্ডোর কাছে এমন সব নেতিবাচক খবর পৌঁছেছিল কিনা জানা নেই। কিন্তু তিনি তো বহুযুদ্ধের সৈনিক। সৌদি প্রো লিগে আল ফতেহ ও আল নাসেরের মধ্যে খেলা ২-২ গোলে শেষ হয়। শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। আর সেই গোলেই ম্যাচ ড্র হয়। গোলটা না পেলে আর আল নাসের হোঁচট খেলে কী যে হত, তা সহজেই অনুমান করা যায়। গোল পেলেও রোনাল্ডো কি রোনাল্ডোচিত পারফরম্যান্স করেছেন ম্যাচে? পর্তুগিজ মহাতারকা প্রথম তিরিশ মিনিটে বহুবার বলের দখল হারিয়েছেন। দু’ বার গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু গোল পাননি। কিন্তু তিনি তো গোলের জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। গোলের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতেও তিনি রাজি। রোনাল্ডো অপেক্ষা করেছিলেন খেলার একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। শেষ ভাল যার সব ভাল। ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। আর গোল পাওয়ায় রোনাল্ডো সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ”সৌদি লিগে নিজের প্রথম গোল করতে পেরে আনন্দিত।”
১২ মিনিটে গোল করে আল ফতেহকে এগিয়ে দেন ক্রিশ্চিয়ান টেলো। ট্যালিস্কা ৪২ মিনিটে সমতা ফেরান। ৫৮ মিনিটে বেনডেবকা গোল করে এগিয়ে দেন আল ফতেহকে। আল নাসের অপেক্ষা করেছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। সেই রোনাল্ডো-মুহূর্তের। পেনাল্টি স্পট থেকে গোললাইন, পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় সরণী। এই সরণীতে পথ হারিয়েছেন অনেকেই। রোনাল্ডো কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। আল ফতেহের গোলকিপারকে বিভ্রান্ত করে, বিপথগামী করে আল নাসেরের হার এড়ালেন।