সুকুমার সরকার,ঢাকা: ওড়িশা উপকূলে ইতিমধ্যেই তাণ্ডব চালিয়েছে তীব্র ঘূর্ণিঝড় ফণী৷ এবার তার গতিমুখ বাংলাদেশের দিকে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা৷ শুক্রবার রাতের মধ্যেই বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলিতে ফণী আছড়ে পড়ার আশঙ্কা৷ তবে তার শক্তি ততক্ষণে বেশ খানিকটা কমে যাবে বলেও কিছুটা আশার কথা শুনিয়েছে হাওয়া অফিস৷ তবে ফণীর প্রভাবে তার ইঙ্গিত পেতে শুরু হয়েছে ওপার বাংলা৷ এদিন সকাল পৌনে দশটা থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি৷ উপকূলের ১৯টি জেলায় জারি হয়েছে সতর্কতা৷
[আরও পড়ুন : ফণীর ছোবল থেকে বাঁচতে ঈশ্বরই ভরসা! প্রার্থনা করতে বললেন হাসিনা]
ফণী মোকাবিলায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে হাসিনা প্রশাসন৷ তৈরি হয়েছে বহু ত্রাণ শিবির৷ আর শুক্রবার সকাল থেকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরই উপকূলের ১০ জেলা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ ফণীর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাতেও সকাল থেকে চলছে বৃষ্টি, সেইসঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া৷ আবহাওয়া দপ্তরের হিসেব বলছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সন্ধেবেলা না হলেও, মাঝরাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে ফণী৷ সারারাত চলবে দাপট। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের উপর দিয়ে বইবে প্রবল ঝড়। তখন তার আনুমানিক গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার৷
এদিন বেলা একটু বাড়তেই উপকূলীয় জেলা খুলনার কয়রা অঞ্চলেই সবচেয়ে আগে দুর্যোগ শুরু হয়েছে৷ সকালের দিকে রোদ থাকলেও, দশটা নাগাদই পালটে যেতে থাকে আবহাওয়ার গতিবিধি৷ বোঝা যায়, ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে ফণী৷ কয়রার মানুষজনকে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করেন উপকূলরক্ষী বাহিনী৷ এখানেই কিছুটা বিপাকে পড়তে হয় তাঁদের৷ প্রথমদিকে বাড়ি থেকে আশ্রয় শিবিরে যেতে চাইছিলেন না কেউ৷ কিন্তু পরে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায়, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে নেন তাঁরা৷
[আরও পড়ুন : প্রেমিকাকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ, কারাগারে মীরাক্কেল খ্যাত কমেডিয়ান]
সৈকত শহর কক্সবাজারের পরিস্থিতিও একইরকম৷ ফণীর সতর্কবার্তা দিয়ে সেখানকার পর্যটকদের আগেই ফিরে যাওয়ার জন্য মাইকিং হলেও, সকলে তাতে কর্ণপাত করেননি৷ অনেকেই সমুদ্রের ফুঁসে ওঠা রূপ দেখতে দীর্ঘতম সমুদ্রতটে থেকে গিয়েছেন৷ এদিন সকাল থেকে তাঁদের দ্রুত সরিয়ে নিতে বেশ বেগ পেতে হয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে৷ এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে প্রথমে নারী, শিশু ও বয়স্কদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের নিরাপত্তায় বাড়তি নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৯টি উপকূলীয় জেলায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৩৮৬৮টি আশ্রয় শিবির তৈরি রয়েছে।
ফণীর জন্য বাতিল করা হয়েছে বাংলাদেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা৷ শনিবার যেখানে যে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ নতুন করে পরীক্ষার দিনক্ষণ পরে জানানো হবে৷
The post ফণা তুলল ফণী, বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলিতে শুরু প্রবল ঝড়বৃষ্টি appeared first on Sangbad Pratidin.