অর্ণব আইচ: কেরিয়ার শুরুর অল্পদিনের মধ্যে চেনা মুখ হয়ে ওঠা, হাতে প্রচুর কাজ, জীবনযাপনের ধরন বদলে যাওয়া। খুব কম সময়ের মধ্যে জীবন বদলে গিয়েছিল বাংলা টেলিসিরিয়ালের অভিনেত্রী পল্লবী দে’র (Pallavi Dey)। কিন্তু আপাত সচ্ছল, সুখী জীবনের আড়ালে যে দানা বাঁধছিল সম্পর্কের অসুখ, তা জানা যায়নি বহুদিন। যখন জানা গেল, তখন বড় দেরি হয়ে গিয়েছে। পল্লবী ততক্ষণে সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছে জীবনের ওপারে, সমস্ত সম্পর্ক থেকে অনেক দূরে। রবিবার গড়ফায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। আচমকা এই মৃত্যু রহস্যে ঘেরা নিশ্চিতভাবেই। আর তার কিনারা করতে গিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েনের উপরই জোর দিচ্ছেন তদন্তকারীরা।
‘আমি সিরাজের বেগম’, ‘রেশম ঝাঁপি’, ‘মন মানে না’ খ্যাত পল্লবীর আসল বাড়ি হাওড়ার (Howrah) রামরাজাতলায়। কাজের সূত্রে রুপোলি জগতে পা রাখার পর কলকাতায় বসবাস। এপ্রিল মাসের শেষে গড়ফায় (Garfa) ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন পল্লবী। সঙ্গে থাকতেন তাঁর প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তী। সাগ্নিকের সঙ্গে তাঁর অনেকদিনের সম্পর্ক। অভিনেত্রী পল্লবীর প্রেমিক পেশায় একজন সিনে ব্লগার। নিজের সম্পর্ক কখনওই গোপন করেননি পল্লবী। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) উভয়ের ছবি দেখলেই তা স্পষ্ট হয়। কিন্তু এই সম্পর্ক আপাতভাবে সুমধুর মনে হলেও, তলে তলে শিকড় ছড়াচ্ছিল প্রেমহীনতা। আর তাই হয়ত সম্পর্কে দমবন্ধ লাগছিল পল্লবীর।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন স্বামী! তারপরই মর্মান্তিক পরিণতি স্ত্রীর]
টলি ইন্ডাস্ট্রিতে (Tollywood) পল্লবীর সহকর্মীদের কাছেই জানা গিয়েছে, তিনি মাঝেমধ্যে বলতেন, ”সম্পর্কে দমবন্ধ হয়ে আসছে। আমি বেরতে চাই।” কিন্তু বলা যতটা সহজ, সম্পর্ক থেকে বেরনো তো সহজ নয় মোটেও। তাই সাগ্নিকের সঙ্গে অশান্তি, বাকবিতণ্ডা সহ্য করেও একসঙ্গেই থাকতেন পল্লবী। উভয়ের ইগোর লড়াইও ছিল। রবিবার অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তদন্তে নেমে সহকর্মীর বয়ান নিয়েছে গড়ফা থানার পুলিশ। আর তাতে ‘সম্পর্কে দমবন্ধ’ কথাটির জট খুলতে সর্বাধিক জোর দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূ্ত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: এবার ডিগ্রি কোর্সে বেদও! জাতীয় শিক্ষা নীতির আওতায় বৈদিক বোর্ড গঠনে উদ্যোগী কেন্দ্র]
এরই মধ্যে পল্লবীর পরিবার চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে। সাগ্নিক দিনকয়েক আগে আচমকা অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলেছিল। সে কথা পল্লবী জানতেন না। পরে তা জানতে পেরেই অশান্তি চরমে ওঠে। সাগ্নিকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। যদিও বিয়ের কথা সাগ্নিক অস্বীকার করেছেন। পল্লবীর পরিবারের আরও অভিযোগ, সাগ্নিকের মা পছন্দ করতেন না তাঁদের মেয়েকে। সে কারণেই সম্ভবত সাগ্নিকের অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন।তাই পুলিশের নজরে সাগ্নিক চক্রবর্তী। তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।