দেব গোস্বামী, বোলপুর: ইউনেসকোর স্বীকৃতির পরে শান্তিনিকেতনকে আরও সুন্দর করে রাখার দায়িত্ব যেমন বিশ্বভারতীর তেমনই জেলা প্রশাসনের। শান্তিনিকেতনকে সুন্দর রাখতে জেলা প্রশাসন গড়েছে ৮ সদস্যর বিশেষ কমিটিও। জেলাশাসকের নির্দেশে শুক্রবার বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কক্ষে স্বীকৃতির পরিসর, বিধি-নিষেধ, সীমাবদ্ধতা, বাফার জোন এবং কোর এরিয়া নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। আলোচনায় বিশ্বভারতী, বোলপুর পুরসভা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ, পূর্ত বিভাগ, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, টোটো ইউনিয়ন-সহ প্রবীণ আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
জানা গিয়েছে, ৮ জনের কমিটি গড়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঐতিহ্য ক্ষেত্র হিসাবে এলাকায় রয়েছে আশ্রম চত্বর, পাঠভবন, কলাভবন, সংগীতভবন, উত্তরায়ণ। রবীন্দ্রনাথের বাসভবন উত্তরায়ণের মধ্যে রয়েছে উদয়ন, উদীচী, শ্যামলী, পুনশ্চ, কোনার্ক –পাঁচটি বাড়ি। এছাড়াও উপাসনা গৃহ ও ছাতিমতলা সবই ঐতিহ্য ক্ষেত্রের তালিকায় রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও কী করণীয় রয়েছে এই বিষয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়।
[আরও পড়ুন: প্রাণ বাজি রেখে সাঁতরে ৩ মহিলাকে উদ্ধার, মেমারির পুলিশকর্তাকে কুর্নিশ]
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো জানান, “জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুশি। বাফার জোন, কোর এরিয়া নিয়েও নির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে। শান্তিনিকেতন এবং আশপাশের যানজট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, টোটো সমস্যা,পার্কিং জোন ইত্যাদি বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীতে যৌথভাবে সার্ভে করে দেখা হবে, কোথায় কোথায় পার্কিং জোন করা যায়। এছাড়াও কোথায় অবাঞ্ছিত কাজ হচ্ছে, সমস্যা কোথায়, ক্যাম্পাসে লটারি বিক্রি, নেশাদ্রব্য বিক্রি নিয়েও পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, টোটো নিয়ন্ত্রণ, যানজট সমস্যার সমাধান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পার্কিং জোন করা হবে দুটি জায়গায় –একটি সাঁতারপুকুর এলাকায় এবং অপরটি হবে রতনপল্লি নিমতলায়। তবে ৬ তারিখ পরিদর্শন করবে বিশেষ কমিটি। পূর্তদপ্তর, পুরসভা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। নতুন করে ড্রপ গেটেরও ব্যবস্থা হবে। প্রবীণ আশ্রমিক প্রীতম রায়, কল্পিকা মুখোপাধ্যায়, সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঐতিহ্যশালী স্থাপত্যের কোনও ক্ষতি যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে। টোটো নিয়ন্ত্রণ, যানজট-সহ দূষণ থেকে দূরে রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। এখন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা থেকে পড়ুয়া প্রাক্তনীদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে।