প্রসূন বিশ্বাস, বারাকপুর: সুহেল ভাটের পেনাল্টি শটটা বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচাতেই লাল-হলুদ গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস বেড়ে গেল। ততক্ষণে সুহেল হতাশায় শুয়ে পড়েছেন। আগের ডার্বিতেই স্টেনগান সেলিব্রেশন করেছিলেন। এদিন যেন হতাশায় ডুবে গেলেন মোহনবাগানের (Mohun Bagan) এই কাশ্মীরি ফুটবলার। উল্টো দিকে পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার গৌরব সাউ।
তাঁর উত্থানটাও যথেষ্টই চমকপ্রদ।গত ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) যুব দলের প্রথম গোলকিপার রণিত সরকার যদি পাঁচ গোল না খেতেন তাহলে হয়তো এই ম্যাচে গৌরব সুযোগই পেতেন না। তিনি এতদিন ট্রায়ালে ছিলেন। রণিতের পাঁচ গোল হজমের ফলে তাঁর প্রথম একাদশে ঢোকার পথ পরিষ্কার হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন তিনি। এদিন গৌরব শুধু পেনল্টি বাঁচালেন না, একইসঙ্গে মোহনবাগানের দুটি আক্রমণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাঁচান।
[আরও পড়ুন: প্রস্তুতি নিয়েও আইপিএলে ‘ব্যর্থ’, ঈশানের কাঁধে সান্ত্বনার হাত জয় শাহর, ভাইরাল ছবি]
ম্যাচ শেষ হতেই দেখা যায় লাল-হলুদ কোচ, কর্তারা জড়িয়ে ধরেছেন গৌরবকে। হরিপালের ছেলে গৌরব গত মরশুমে পোর্ট ট্রাস্টের হয়ে কলকাতা লিগ খেলেছেন। বড় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই সমর্থকদের ভালোবাসায় ভেসে গেলেন তিনি। বাবা সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। গুরপ্রীত সিং সান্ধু আর ম্যানুয়েল নয়্যারকে আদর্শ করে বেড়ে ওঠা গৌরব বলেন, “এভাবেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।” উত্তরপাড়া নেতাজি ব্রিগেডের ছাত্রটি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পেনাল্টি শটটা বাঁচানোর ক্ষেত্রে। বলেন, “যখন শটটা মারছিল, আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।” জিতলেও প্রতিশোধের ম্যাচ মানতে চান না ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ। বলেন, ‘‘আগের ম্যাচটা যেহেতু হেরেছিলাম, তাই এই ম্যাচটা জেতা দরকার ছিল।”
প্রসঙ্গত, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে ১৮ মার্চের ডার্বিতে ৫-১ গোলে জিতেছিল মোহনবাগান। ঠিক গুনে গুনে ছয় দিনের মাথায় সেই টুর্নামেন্টের জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচেই ২-০ গোলে ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ শেষে শুধু বদলাই নয়, আগের ডার্বিতে যেভাবে স্টেইনগান সেলিব্রেশন করেছিলেন সুহেল ভাটরা, ঠিক সেভাবে স্টেইনগান সেলিব্রেশনে মাতলেন আমন সিকে, মহম্মদ রোশালরা। যদিও ম্যাচ শেষে গোলদাতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “গোল করে মোহনবাগান জনতার উদ্দেশ্যে ওই সেলিব্রেশন করা উচিত হয়নি।” তবে এদিন সুহেলের পেনাল্টি বাঁচিয়ে লালহলুদ সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠলেন গৌরব।