shono
Advertisement
Reels

সন্তানকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন বাবা-মাও! রিলসের নেশা সর্বনাশা

জীবনের ঝুঁকি নিয়েও স্টান্ট!
Published By: Kishore GhoshPosted: 02:38 PM Jul 10, 2025Updated: 02:38 PM Jul 10, 2025

‘ভাইরাল’ হতে কখনও সন্তানকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন বাবা-মা। কেউ করছে মারাত্মক স্টান্ট। রিল্‌সের নেশা, সর্বনাশা।

Advertisement

তরুণ-তরুণীদের একদা প্রধান চিন্তা ছিল পড়াশোনা, কেরিয়ার, আত্মোন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন অনেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকছে রিল্‌স বানানো, ভিডিও এডিটিং কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ফলোয়ার’ বাড়ানো নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলো– যেমন, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব শর্টস– তরুণ প্রজন্মের মনে জন্ম দিয়েছে এক ধরনের কৃত্রিম ‘তারকাখ্যাতি’-র মোহ। কয়েক সেকেন্ডের ভিডিওতে ‘ভাইরাল’ হয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, লাইক-কমেন্টের নেশা বা অর্থোপার্জনের আশায় তারা দিন-দিন গা ভাসিয়ে দিচ্ছে এই ভার্চুয়াল বাস্তবতায়। যার জেরে কখনও চলন্ত ট্রেনের নিচে শুয়ে পড়ছে কেউ, বিপদসংকুল প্রপাতের ধারে ঝুঁকি নিয়ে নাচ-গানে ব্যস্ত হচ্ছে, রাতের শহরে করছে মোটরবাইক নিয়ে মারাত্মক স্টান্ট।

একটা সময় পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের দিকেই আঙুল তোলা হচ্ছিল। কিন্তু রিল্‌সের নেশা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সব প্রজন্মের মধ্যেই। সন্তানকে নিয়ে রিল্‌স বানাতে ব্যস্ত বাবা-মা। এবং তা করতে গিয়ে অনেক সময় ভাল-মন্দর বোধও লোপ পাচ্ছে। এমন অনেক কথা বাচ্চার মুখ দিয়ে বলানো হচ্ছে যে, সাময়িক আনন্দ হয়তো অনেকে পাচ্ছেন।

কিন্তু বাচ্চার মনের গভীরে তার কী ছাপ পড়ছে, তার হদিশ বাবা-মা রাখছেন না। রাজস্থানের ভরতপুরে বরেথার ঘটনা তো আরও মারাত্মক। ভরা নদীর পাশে জল মাপার গেজ বক্সে ছোট সন্তানকে জোর করে বসিয়ে দিয়েছেন তার বাবা-মা। ভরসা শুধু দু’টি রড, মাঝখানটা একেবারে ফঁাকা। নিচে খরস্রোতা নদী। আতঙ্কে কঁাদছে মেয়ে। বারবার বাবা, মায়ের হাত অঁাকড়ে ধরছে। কিন্তু পাত্তা না দিয়ে তাকে উল্টে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তাৎক্ষণিক সাফল্য ও উত্তেজনার নেশায় নিজের প্রাণাধিক প্রিয় সন্তানকে বাজি রাখতেও দু’বার ভাবছেন না!

কোনও যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ, পড়াশোনার দরকার নেই। হাতে স্মার্টফোন থাকলেই সহজে বাজিমাতের সুযোগ। যেজন্য বন্ধুর আইফোন হাতাতে তাকে খুন করতেও ভাবছে না মানুষ। এ কোন সভ্যতার উন্মেষ ঘটছে? শহর থেকে গ্রাম, পাগলামি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। এটা সত্যি যে, কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর এই প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে মোটা অঙ্কের অর্থই উপার্জন করছে, তবে সংখ্যাটি নিতান্ত কম। অধিকাংশই অর্থের মুখ না দেখে বছরের পর বছর শুধু সময় ও প্রাণশক্তি ব্যয় করছে নেশায় পড়ে। অন্যের জীবনযাত্রা দেখে হীনমন‌্যতা অনেকের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। এতে আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রিল্‌স বানানো পুরোটাই খারাপ নয়, তবে সেটি যদি জীবনের ভারসাম্য, ভবিষ্যৎ ও সম্পর্ক ধ্বংস করে দেয়, তাহলে তা ভয়ানক বিপর্যয়ের রূপ নিতে পারে। বর্তমান সময়ে সোশাল মিডিয়া পুরো বর্জন করা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু সচেতনভাবে তার ব্যবহারটা বেশি জরুরি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • একটা সময় পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের দিকেই আঙুল তোলা হচ্ছিল।
  • কোনও যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ, পড়াশোনার দরকার নেই।
Advertisement