shono
Advertisement
Alakananda

১৫০ কোটি বছরে এমন ব্যাপ্তি! নয়া ছায়াপথ ‘অলকানন্দা’য় বিস্মিত বিজ্ঞানীরা

মহাবিশ্বের সৃজন ও গঠনের ধ্রুপদী ধারণা বদলে দিলেন দুই ভারতীয় গবেষক।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 07:04 PM Dec 07, 2025Updated: 07:04 PM Dec 07, 2025

আবিষ্কৃত হয়েছে সৌরজগতের নতুন ছায়াপথ। ‘অলকানন্দা’। ১৫০ কোটি বছরের মধ্যে কোনও ছায়াপথের এমন ব্যাপ্তি সম্ভব! হৃদি ভেসে যায়।

Advertisement

মহাবিশ্বের সৃজন ও গঠনের ধ্রুপদী ধারণায় চমক লাগানো বদল নিয়ে এলেন রেডিও অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের দুই ভারতীয় গবেষক– রাশি জৈন এবং যোগেশ ওয়াদাদেকর। এঁরা দু’জনেই মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণা করছেন পুনের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’-এর ডানার তলায় ‘সেন্টার ফর রেডিও ফিজিক্স’-এ। ক’-দিন আগে নাসা-র জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের অবিশ্বাস্য দৃরদৃষ্টিকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা আবিষ্কার করেছেন সৌরজগতের এক নতুন, কল্পনাতীত অতিকায় ‘সর্পিল ছায়াপক্ষ’। পৃথিবী থেকে যার অবিশ্বাস্য বিহ্বল দূরত্ব ১২০০ কোটি আলোকবর্ষ। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে এই প্রথম দেখা দিয়েছে ১২০০ কোটি বছরের পুরনো আলো। রাশি আর যোগেশ এই ছায়াপথের নাম দিয়েছেন ‘অলকানন্দা’। তার কারণ, আমরা যে-ছায়াপথের বাসিন্দা, তার নাম ‘আকাশগঙ্গা’। তাঁরা ছায়াপথের নাম কেন রেখেছেন অলকানন্দা, তারও ভারি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা করেছেন– ‘হিমালয় থেকে নেমে এসেছে দুই যমজ নদী– মন্দাকিনী আর অলকানন্দা। মন্দাকিনী তো স্বর্গের গঙ্গা, বা আকাশগঙ্গা। আমাদের আকাশগঙ্গার সঙ্গে অনেক মিল এই নব আবিষ্কৃত ছায়াপথের। প্রায় যমজ মনে হয়। তাই নাম দিয়েছি অলকানন্দা।’

অলকানন্দা থেকে যে-আলো পৃথিবীর পানে পাড়ি দেয়, পৃথিবীতে তার পৌঁছতে লাগে ১২০০ কোটি বছর। যখন ব্রহ্মাণ্ডের বয়স ছিল মাত্র ১৫০ কোটি বছর। সুতরাং অলকানন্দার সমস্ত শরীর জুড়ে ছড়িয়ে আছে মাত্র ১২০০ কোটি বছরের একেবারে শিশু ব্রহ্মাণ্ডের রূপ। মাত্র ১৫০ কোটি বছরের মধ্যে অলকানন্দা ঠান্ডা হয়ে তার জটিল সর্পিল বিস্তারে পৌঁছল কী করে? এত কম সময়ের মধ্যে কোনও ছায়াপথের এমন অবিশ্বাস্য ব্যাপ্তি এবং রূপময়তার প্রকাশ সম্ভব! এই প্রশ্নের সামনে বিহ্বল গবেষকরা।

অলকানন্দা আরও প্রগাঢ় বিস্ময় তৈরি করেছে। গবেষকরা বলছেন– “আমাদের দেখা মহাবিশ্বে অলকানন্দা-ই একমাত্র ‘কসমিক পাওয়ারহাউস’। তার কারণ, এই প্রথম আমরা দেখলাম এমন এক ছায়াপথ, যার অন্তরে ধৃত নক্ষত্রের ‘মিলিত ভর’ সূর্যের ১০০০ কোটি গুণ।” তাছাড়া অলকানন্দা নক্ষত্র সৃজনেও অবিশ্বাস্য। প্রতি বছর এই ছায়াপথে তৈরি হয় ৬৪ সৌরভবের নতুন নক্ষত্র, যা আকাশগঙ্গার চেয়ে ২০-৩০ গুণ বেশি। এবং অলকানন্দার রূপবর্ণনায় এই ছবিটি এঁকেছেন রেডিও-ফিজিক্সের গবেষকরা: এই ছায়াপথ তার ঢিপির মতো উঁচু হয়ে ওঠা কেন্দ্রটিকে দু’টি সাপের মতো হাত বাড়িয়ে এমন সুরম্যভাবে জড়িয়ে আছে, সেই রূপ না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এই দু’টি হাতের সর্পিল বিস্তার, এখনও পর্যন্ত পৃথিবী থেকে যতটা দৃশ্যমান, প্রায় ৩০ হাজার আলোকবর্ষ। কিন্তু যা অবিশ্বাস্য, তবু বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছেন, এই বিপুল সৃজন এবং প্রসার ঘটেছে মাত্র কয়েকশো কোটি বছরে। মহাবিশ্বের সৃজন, গঠন এবং ব্যাপ্তিতে এমন দ্রুতির সামনে আধুনিক অ্যাস্ট্রোফিজিক্স যুগপৎ প্রশ্নে-পরিপ্রশ্নে আলোড়িত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মহাবিশ্বের সৃজন ও গঠনের ধ্রুপদী ধারণা বদলে দিলেন দুই ভারতীয় গবেষক।
  • এঁরা দু’জনেই মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণা করছেন পুনের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’-এর ডানার তলায় ‘সেন্টার ফর রেডিও ফিজিক্স’-এ।
  • জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে তাঁরা আবিষ্কার করেছেন সৌরজগতের এক নতুন, কল্পনাতীত অতিকায় সর্পিল ছায়াপক্ষ ‘অলকানন্দা’।
Advertisement